মুজিবনগর সরকারের দক্ষতায় ৯ মাসে হানাদার মুক্ত হয় বাংলাদেশ
- ১০ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠিত হয়
- ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বেতার ভাষণ দেন
- দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয় ভাষণে
- পরে বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় ‘মুজিবনগর’
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন ১০ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এদিনে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। সরকার গঠনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকেও অনুমোদন করা হয়।
১০ এপ্রিল পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয় তার অনুপস্থিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি করা হয়। তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হয়।
অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রীর দায়িত্ব পান এম মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান এ এইচ এম কামারুজ্জামান। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি খন্দকার মোশতাক আহমদও পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পর ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দীন আহমদ একটি বেতার ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় এই সরকার শপথগ্রহণ করে।
মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করেন ‘মুজিবনগর’। সেই থেকে কলকাতায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিবনগর’ সরকার নামে পরিচিত হয়। এই সরকারের নেতৃত্বে পুরো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়।
মুজিবনগর সরকার সফলতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। এই সরকারের দক্ষতার ফলেই মাত্র ৯ মাসে বাংলাদেশ হানাদার পাকিস্তানিদের দখলমুক্ত হয়েছিল। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তাই ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয়, অমলিন একটি দিন।
