উপজেলা নির্বাচন: বহিষ্কারের পর ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ দিলেও কেন পাত্তা দিচ্ছেন না বিএনপির প্রার্থীরা?
নির্দিষ্ট প্রতীক না থাকায় সব দলের প্রার্থীরা সমানতালে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এজন্য ভোট নিরপেক্ষ হবে বলেও আশা করা যাচ্ছে।
দেশজুড়ে শুরু হয়েছে উপজেলা নির্বাচনের তোড়জোড়। বইছে উৎসবের আমেজ। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের। বসে নেই বিএনপির ‘বহিষ্কৃত’ নেতারাও। যদিও নির্বাচনী মাঠ ছাড়লে দলে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ দিয়েছে হাইকমান্ড। তবু ভোটযুদ্ধে নামা তৃণমূল প্রার্থীদের বাগে আনতে পারছে না দলটি। উল্টো বহিষ্কারাদেশ পাত্তা না দিয়েই শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন তারা।
এবার চার ধাপে হচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রথম ধাপে প্রার্থী হওয়ায় এরই মধ্যে ৭৬ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি; যাদের ৩৫ জনই লড়ছেন চেয়ারম্যান পদে। বাকিরা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। তবে দলীয় পদ হারালেও প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে নারাজ এসব নেতা। প্রতীক পেয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর এখন আর দলের শক্ত পদক্ষেপ নিয়েও ভাবতে চান না অনেকে। এমনকি পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে অংশ নিতে পদত্যাগও করছেন কেউ কেউ।
তৃণমূল নেতারা বলছেন, দ্বাদশ নির্বাচনের পর মাঠপর্যায়ের বেশিরভাগ নেতা-কর্মীর মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। ঠিক এই মুহূর্তে উপজেলা নির্বাচন ঘিরে বড় সংখ্যায় বহিষ্কার করলে দল আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। এছাড়া নির্দিষ্ট প্রতীক না থাকায় সব দলের প্রার্থীরা সমানতালে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এজন্য ভোট নিরপেক্ষ হবে বলেও আশা করা যাচ্ছে। এসব বিবেচনায় রেখে হলেও অন্তত হাইকমান্ডকে আরেকটু নমনীয় হওয়া উচিত বলে মত দেন তারা। কিন্তু তৃণমূলের মাঠের বাস্তবতা বুঝতে নারাজ হাইকমান্ড।
বহিষ্কৃত কয়েকজন নেতা আরও বলছেন, নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত আগে নিলে ভালো হতো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঘোষণা আসায় অনেকেই প্রার্থিতা বহাল রাখতে বাধ্য হন। কারণ মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মনোযোগ ভোটের দিকে। এসব কথা হাইকমান্ডকে বারবার বলার পরও কোনো সাড়া মেলেনি। আর এখন নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। তবে সবকিছু বুঝেশুনেই আমরা মাঠে নেমেছি। এজন্য বহিষ্কার করলেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
তারা বলছেন, সব দলেরই তৃণমূলে আলাদা অবস্থান থাকে। আমাদেরও রয়েছে। তৃণমূলের কিছু মানুষ এখনো বিএনপিকে চায়। আমরাও জনপ্রতিনিধি হয়ে নতুন কিছু দিতে চাই। কারণ ২০১৮ সালের পর থেকে স্থানীয় সরকারের কোনো ভোটেই অংশ নেয়নি বিএনপি। ফলে বড় রাজনৈতিক দলের নেতা হয়েও আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এসব কিছু মাথায় রেখেই আমরা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি।