প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কমিশন!
তত্ত্বাবধায়কের দায় নির্বাচন কমিশনের না
বরিশাল সিটি করপোরেশনে মুফতি ফয়জুল করিমের ওপর হামলা এবং ঢাকা ১৭ আসনে হিরো আলমের ওপর হামলার মাধ্যমে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ দুটো ঘটনাতেই নির্বাচন কমিশনের কোন দায় ছিল না।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে নাকি দলীয় সরকারের অধীনে হবে সেটির চুড়ান্ত ফয়সালা এখনও হয়নি। মূলত এই সিদ্ধান্তটি আসবে দেশের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে, যেখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষটি সকল বিশৃঙ্খলার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে চলেছে। কিন্তু আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হোক অথবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, সেটি দেখার কাজ নির্বাচন কমিশনের নয়। নির্বাচন কমিশনের কাজ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা। এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যার সাথে রাজনীতির প্রত্যক্ষ কোন সম্পর্ক নেই।
তবে রাজনীতিবদরা প্রায়শই এই পার্থক্য ভুলে তাদের নিজস্ব বিরোধ, মতানৈক্য ও মাঠের বিশৃঙ্খলাকে নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপিয়ে দেন। ভোটের মাঠে বিশৃঙ্খলা, পরস্পরের ওপর হামলাসহ সবকিছুর জন্যই কিন্তু দায়ী করেন নির্বাচন কমিশনকে।
মূলত নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে তত্ত্বাবধায়কের দাবিকেই সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন তারা। বিগত কয়েকটি উপনির্বাচনে নিজেদের বিশৃঙ্খলার দায় নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে চাপিয়ে তারা সেই কাজটিই করেছেন। যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি চারটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও একটি সংসদ উপনির্বাচন সম্পন্ন করেছে এই নির্বাচন কমিশন যেখানে কোথাও সরকার সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছে, কোথাও সরকার বিরোধী প্রার্থী জয়ী হয়েছে। বিশ্বের যে কোন মানদণ্ডেই সবগুলো নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠ হয়েছে এবং ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়।
সকল ভালোর মাঝেও বরিশাল সিটি করপোরেশনে মুফতি ফয়জুল করিমের ওপর হামলা এবং ঢাকা ১৭ আসনে হিরো আলমের ওপর হামলার মাধ্যমে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ দুটো ঘটনাতেই নির্বাচন কমিশনের কোন দায় ছিল না। দুটো ঘটনার সঠিক পর্যালোচনা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
অন্যদিকে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন আইনও সংযোজিত হয়েছে, সংশোধনী নয়। এটি ৯১এ(এ)ধারা, যেখানে ইসি চাইলে আংশিক নির্বাচন বাতিল করতে পারবে। আর পূর্বের ধারা ৯১এ বলবৎ আছে,অর্থাৎ ইসির ক্ষমতা সংক্রান্ত কোনো ধারাই বাতিল করা হয়নি, উপরন্ত ক্ষমতা সুসংহত করতে ধারা সংযোজিত হয়েছে। অথচ বলা হচ্ছে এতে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কোন ক্ষমতা ক্ষুন্ন করা হয়নি বরং সুসংহত হয়েছে।