এবার বিয়ের দাবিতে আইডিয়ালের শিক্ষকের বাসায় ছাত্রী

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৫২, বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩, ১৬ ভাদ্র ১৪৩০

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির একজন দাতা সদস্য একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করা নিয়ে চলছে তোলপাড়। এ বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। এরমধ্যেই বিয়ের দাবিতে আইডিয়ালের এক শিক্ষকের বাসায় গিয়ে ওঠেন আরেক ছাত্রী। পরে কয়েকজন শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় ছাত্রীকে তার পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।

 

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-অভিভাবকরা।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষক হলেন- মুরাদ আহম্মদ। তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল (মতিঝিল) শাখার ইংরেজি ভার্সনের দিবা শাখার ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। অন্যদিকে ওই ছাত্রী বর্তমানে একটি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।

ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারের অভিযোগ, বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন শিক্ষক মুরাদ আহম্মদ। কিন্তু এখন আর বিয়ে করতে চাইছেন না তিনি। এজন্য ওই ছাত্রী গত ২৩ আগস্ট রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে শিক্ষকের বাসায় গিয়ে ওঠেন।

ছাত্রীর পিতা থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেছেন, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল (মতিঝিল) ক্যাম্পাসের ইংরেজি ভার্সনের দিবা শাখার ইংরেজির শিক্ষক মুরাদ আহম্মদের কাছে মেয়ে কোচিং করতো। শিক্ষক মুরাদ আহম্মদ দুই সন্তানের জনক হওয়া সত্ত্বেও আমার কোমলমতি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করতে প্রলুব্ধ করে। বিভিন্ন সময় নানারকম প্ররোচনা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট মুরাদ আহম্মদ তার উত্তর শাহজাহানপুরের বাসায় আসতে বলে। ওই দিন রাত আনুমানিক ৯টায় আমার মেয়ে মুরাদ আহম্মদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে কাউকে কিছু না বলে তার বাসায় চলে যায়। খবর পেয়ে আমরা মেয়েকে উদ্ধার করতে ওই বাসায় গেলে মুরাদ পালিয়ে যায়।

বুধবার (৩০ আগস্ট) আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরাম অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ আহম্মদকে চাকরিচ্যুত ও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।

অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিম উদ্দিন আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রুস্তম আলী যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানান, গত ২৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের ওই শিক্ষকের বাসায় ওই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে ওঠেন। বিবাহিত হয়েও বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুললেও এখন আর বিয়ে করতে চাইছেন না তিনি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকরা বিব্রত।

অভিভাবক ফোরামের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এর আগেও ২০১৩ সালে ৪র্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মুরাদ আহম্মদকে মতিঝিল শাখা থেকে বনশ্রী শাখায় বদলি করা হয়। পরে বর্তমান সভাপতির সহায়তায় তিনি আবার মূল মতিঝিল শাখায় ফিরে আসেন।

এছাড়া ২০১৪ সালে ৪র্থ শ্রেণির অপর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির শাস্তি হিসেবে আরেক অস্থায়ী শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে বহিষ্কার করা হয়।

অভিভাবক ফোরামের দাবি—বিচারহীনতা ও প্রশাসনিক অক্ষমতায় শিক্ষকদের যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে ছাত্রীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ আহম্মদকে চাকরিচ্যুত ও গ্রেপ্তার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্বে) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি কিছুটা শুনেছি। বিস্তারিত জানি না। উনি (মোরাদ) স্কুলেও আসেননি। এটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করে দেখবো।

প্রসঙ্গত, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ স্কুলের এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন। বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয় আলোচনা-সমালোচনা। ছাত্রীর বাবার মামলা বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। পরে আদালত রায় দেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না মুশতাক আহমেদ। পরে পরিচালনা পর্ষদ (দাতা সদস্য) থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article