কপিল দেবকে ছাড়াই ভারতের বিশ্বকাপ ফাইনাল!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:১৩, সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকেই খেলছে ভারত। ১৯৭৫ সালের প্রথম আসরে তিন ম্যাচে একটি জয় পেয়েছিল ভারত। তবে দ্বিতীয় বিশ্বকাপে (১৯৭৯) কোনো ম্যাচেই জয়ের দেখা পায়নি। আর এই দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিস। তখনকার ভারতীয় ক্রিকেট দল এখনকার মতো এমন শক্তিশালীও ছিল না।

তবে বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে (১৯৮৩) গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দেয় ভারত। প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন তারকায় ভরা ক্যারিবিয়ানদের ৪৩ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে নেয় ভারত। এরপর ২০১১ সালে শচীন, ধোনি, যুবরাজ, কোহলিদের মতো তারকা খ্যাত দল নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতে। গতকাল ছিল তাদের তৃতীয় বিশ্বকাপ জেতার জয়ের লড়াই।

আর এই বিশ্বকাপ দেখতে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতা দলের অনেকে আমন্ত্রণ পেলেও পায়নি প্রথম বিশ্বকাপের দলের কেউ। শুধু তাই নয়, ভারত বিশ্ব ক্রিকেটে ছড়ি ঘোরাতে পারে, এই বিশ্বাস জুগিয়েছিলেন যিনি, ভারতকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মানচিত্রে পরিচিতি এনে দিয়েছিলেন যিনি, সেই কপিল দেবকেও আমন্ত্রণ জানায়নি ভারত।

রবিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল ম্যাচে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব উপস্থিত থেকে রোহিতদের বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার সুযোগ পাননি। আইসিসি অথবা বিসিসিআই, কোনো তরফেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাকে। ভারতীয় এক গণমাধ্যমে নিজেই এমনটি নিশ্চিত করেছেন ভারতীয় বিশ্বকাপ জয়ী প্রথম অধিনায়ক। যদিও কপিল দেব অভিভাবকসুলভ উদারতায় বিসিসিআইয়ের সেই ভুল ঢাকার চেষ্টাও করেন।

বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে হাজির হন কপিল দেব। সে সময় তার কাছে ভারতের ফাইনাল ম্যাচে গ্যালারিতে উপস্থিত না থাকার কারণ জানতে চাওয়া হলে সাবেক ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘আপনারা ডেকেছেন, চলে এসেছি। ওরা ডাকেনি, তাই যাইনি। একদম সহজ বিষয়।’ 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘আমি তো চেয়েছিলাম আমার ১৯৮৩-র গোটা দলটাকেই যদি ডাকত, ভালো হতো। তবে এত কাজ, লোকজনের ওপর এত দায়িত্ব রয়েছে, ব্যস্ততায় মাঝে মাঝে এমন ভুল হয়েই যায়।’

মজার বিষয় হচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) চেয়ারম্যান রজার বিন্নিও ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জয়ী দলের একজন সদস্য। আর তিনিই কিনা তার দলের অধিনায় কপিল দেবকে গুরুত্বপূর্ণ দিনে আমন্ত্রণ জানাতে ভুলে গেলেন! 

তবে যাই হোক, কপিল দেব আমন্ত্রণ না পেলেও ব্রডকাস্টারদের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন স্টেডিয়ামে হাজির ঐ বিশ্বকাপজয়ী দলের একাধিক সদস্য। শ্রীকান্ত, গাভাসকাররা ধারাভাষ্যকারের ভূমিকা পালন করেন ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে।

এর আগে ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ের সময় কপিল দেবের বয়স ছিল ২৪ বছর। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও তিনি স্বচ্ছন্দ। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে তার ব্যাটিং দলকে এগোতে সাহায্য করে। ঐ ম্যাচে ভারতের হারের অপেক্ষায় ছিল বিশ্ব। সেই ম্যাচে তিনি ১৭৫ রান করে দলকে জিতিয়ে আনেন। এটি তার ক্যারিয়ারে করা সব থেকে বেশি রান।

১৯৯৪ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। এরপর দীর্ঘদিন তিনি জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। এছাড়াও কমেন্ট্রি করেছেন। এর পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ নামে একটা টুর্নামেন্টের সূচনা করেন। ভারতীয় ক্রিকেটে যার এত অবদান তাকে বিশ্বকাপের মতো একটি বড় আসরের ফাইনালে আমন্ত্রণ না জানানো বিষয়টি দৃষ্টিকটুই লেগেছে।

বিষয়ঃ ভারত

Share This Article