বিসিসি নির্বাচন: ক্ষুব্ধ জামায়াত কর্মীদের হাত করতে চরমোনাই পীরের নতুন কৌশল
আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এখানে ক্ষমতাসীনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক মেয়র প্রার্থী থাকলেও ভোটের শুরুতে জামায়াতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন হাতপাখার প্রার্থী চরমোনাই পীর মুফতি ফয়জুল করিম। নির্বাচিত হলে নগরীতে দেশবিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠী জামায়াতের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে বলেও জানান দেন। তার এমন মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নগরীর জামায়াত নেতা-কর্মীরা। তবে ভোটের আগে ক্ষুব্ধ জামায়াত কর্মীদের হাত করতে নতুন কৌশল বেছে নিয়েছেন কথিত এই পীর।
জানা যায়, চরমোনাই পীরের জামায়াত বিরোধী বক্তব্যের পরে জরুরি বৈঠক করেন সংগঠনটির নগরীর দায়িত্বশীলরা। বৈঠকে জামায়াত নেতারা চরমোনাইকে বয়কট করার ঘোষণাও প্রদান করেন। তবে ফয়জুল করিমের নতুন কৌশল প্রয়োগে কিছুটা নরম হয়েছে দলটি। কারণ ফয়জুল করিম জামায়াতকে আশ্বস্ত করেছে তাকে ভোটের মাঠে সমর্থন দিলে ভবিষ্যতে জামায়াতকে সাথে নিয়ে সরকার বিরোধী বৃহৎ ঐক্য করবে চরমোনাই তথা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে তার এই আশ্বাসে বিস্বাস রাখতে পারেনি জামায়াত। ফলে নির্বাচনে তাকে সমর্থন না দিয়ে উল্টো আওয়ামীলীগ প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতকেই সমর্থন দেয় দলটি।
দীর্ঘদিন জামায়াতকে ধবলধোলাই করলেও সুর নরম করে সম্প্রতি চরমোনাই পীর মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, জামায়াতের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা একই সাথে কাজ করতে পারি। জামায়াতের সাথে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সমস্যাও নেই। আমাদের আদর্শগত কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে আমরা ভবিষ্যতে একই সাথে আন্দোলন বা জোট গঠন করতে পারি। কারণ রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। তাছাড়া জামায়াত তো নিষিদ্ধ কোনো দল নয়।
ইসলামী আন্দোলনের একজন নেতা বলেন, জামায়াত ইসলামী যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদির সাথে কওমি ঘারানার অনেক বড় আলেমরাও ছিলেন। তারা দলটির মজলিশে সূরা সদস্য ছিলেন। মাওলানা মনজুর (রহ), মাওলানা ওয়াহেদুজ্জামান কেরামুল্লাহ, মাওলানা সৈয়দ আবুল হাসান নদভী (রহ) ও বাংলাদেশের সামছুল হক ফরিদপুরী (রহ) ছিলেন। পরে আদর্শিক মতপার্থক্যের কারণে তারা সরে এসেছেন। জামায়াতের সাথে আমাদের দ্বন্দ্ব আদর্শিক। তাদের সাথে আমাদের কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নেই। তারা আমাদের আদর্শকে সমর্থন করলে তাদের সাথে বৃহত ঐক্য হতে পারে।
সমালোচকরা বলছেন, রাজনীতির মাঠের চাল বুঝা বড় মুশকিল। চরমোনাই পীর জামায়াতের ভোট ব্যাংক ধরে রাখতে এখন নতুন কৌশল গ্রহণ করেছেন। যারা কিনা জামায়াতকে সব সময় কোণঠাসা করে রাখতো আজ তারাই সুর নরম করে জামায়াত প্রীতি দেখাচ্ছে। তবে বরিশালে সিটির ভোট কার্যক্রম শেষে বুঝা যাবে চরমোনাইয়ের প্রকৃত রুপ। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে বলে মনে করছেন তারা।