এবারের রমজানে কেন নেই হাহাকার
বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এই রমজানে দেশের মানুষ অনেক ভালো আছে। সামগ্রিকভাবে এখনো পরিস্থিতি ভালো। তাই এবারের রমজানে বাজারে হাহাকার নেই। জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রমজান আসলেই দেশের বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া চিরাচরিত্র দৃশ্য। তবে এবারের রমজানে দেখা যাচ্ছে ব্যতিক্রম চিত্র। রোজায় পণ্যের দাম না বেড়ে উল্টো কমেছে বলে জানা গেছে। যদিও বৈশ্বিক যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর কিছুটা প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের আগাম প্রস্তুতিতে দেশে বৈশ্বিক সংকটের মাঝেও নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়েনি। প্রভাব পড়বে বলে মনে হচ্ছে না। আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, কোনো দুর্বিপাক না হলে বোরো ধানেও বাম্পার ফলন হবে। উৎপাদন খরচসহ সামগ্রিক বিবেচনায় বৈশ্বিক এই সংকটে চালে দাম স্থিতিশীল আছে।
এদিকে রমজানের আগেই সরকারের বাজার মনিটরিংয়ে নিত্যপণ্যের দামও সহনীয় পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রমজানে সব ধরনের মাংসের দাম কমেছে বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে কমেছে ৭০-৭৫ টাকা। চিনির দাম কেজিতে কমেছে ৩ টাকা। অপরদিকে ১২ কেজির এলপিজি গ্যাসের দাম কমেছে প্রায় আড়াই’শ টাকার মতো।
এছাড়া স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে কম দামে সহজে সাশ্রয়ী মূল্যের নিত্যপণ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এক কোটি টিসিবি‘ফ্যামেলি কার্ড’বিতরণ করেছে সরকার। ভর্তুকিমূল্যে টিসিবির পণ্য, ১০ টাকা কেজি দরে ওএমএস ও ভিজিএফের চাল, বাজার দরের চেয়ে কম দামে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে চাল-আটা বিতরণ করছে সরকার।
এর বাইরে আমিষের চাহিদা পূরণে স্বল্প আয়ের মানুষে জন্য ভ্রাম্যমান বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করে ভর্তুকি মূল্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম বিক্রি করছে সরকার। বাজার মনিটরিংসহ বেশ কিছু সরকারি পদক্ষেপের কারণে খাদ্যপণ্য ও ব্যবহারের সব পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে।
রমজানে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের আগেই সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। বিশেষ করে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ ভালো থাকায় উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এই রমজানে দেশের মানুষ অনেক ভালো আছে। সামগ্রিকভাবে এখনো পরিস্থিতি ভালো। তাই এবারের রমজানে বাজারে হাহাকার নেই। জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।