১২৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন : উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের সাথে থাকবে বিশ্বব্যাংক!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:৫৫, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯

এটি সেই সংস্থা বা  ব্যাংক যারা দুর্নীতির অভিযোগে ২০১২ সালে পদ্মাসেতু প্রকল্পের ঋণ বাতিল করেছিলো। ২০২৩ সালে সেই বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ১২৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়ে  ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে পাশে থাকার ঘোষণা দিলো।

যে বছর বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হয়েছিলো, সেবছরই হেনরি কিসিঞ্জারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ডলার হতে অন্তত ১০০ বছর লাগবে।তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ২০১০ সালেই বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৩০০ ডলারের বেশি।ফলে  বিশ্বব্যাঙ্কসহ আন্তর্জাতিক সকল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের আস্থা অর্জন করায় তারা নির্দ্বিধায় বাংলাদেশকে যেকোনো অঙ্কের ঋণ বা অনুদান প্রদান করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে যখন ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে, তখনও অনেকে এটিকে পাগলের প্রলাপ ও 'পলিটিক্যাল স্ট্যান্ডবাজি' বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে।

এবার নতুন খবর হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রুপকল্প ২০৩১ বাস্তবায়নে সরাসরি হাত বাড়িয়েছে বিশ্বব্যাংক।  ২৮ এপ্রিল শুক্রবার
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দিতে তিনটি প্রকল্পের জন্য ১২৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

এমন প্রকল্প প্রায়ই ঘোষণা করে বিশ্বব্যাংক, তবে এবারের ব্যাতিক্রম হলো, ২০৩১ সালে বাংলাদেশ যে মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সেটি মাথায় রেখেই  আগামী  চার বছরের একটি নতুন অংশীদারত্ব কাঠামো (পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক) তৈরি করেছে বিশ্বব্যাংক, যা ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জন্য উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছানোর লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

এটি সেই সংস্থা বা  ব্যাংক যারা দুর্নীতির অভিযোগে ২০১২ সালে পদ্মাসেতু প্রকল্পের ঋণ বাতিল করেছিলো। ২০২৩ সালে সেই বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ১২৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়ে  ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে পাশে থাকার ঘোষণা দিলো।

২৮ এপ্রিল প্রেরিত ঘোষনাপত্রে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, তাদের ‘কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখে, যা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তৃতীয়বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় ঋণের শর্ত নিয়ে। উন্নয়নশীল দেশগুলো যা চায় বিশ্বব্যাংক তা দেয় না, আর বিশ্বব্যাংক যা চায় তা ঋণ নেয়া দেশগুলো দিতে পারেনা। তবে এই প্রথম বাংলাদেশের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে মিল রেখেই ঋণ ছাড় দিলো বিশ্বব্যাংক। এতে অনেকটাই স্পষ্ট হলো যে আগামীতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এলিট শ্রেনীভূক্ত হতে যাচ্ছে, যেখানে বিশ্বব্যাংকের সাথে সাংঘর্ষিক জায়গাগুলো আরও কমে আসবে। আর এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই।

Share This Article