আইএমএফের পূর্বাভাস

২০২৮-এ বাংলাদেশ হবে ১৯তম অর্থনীতি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩৭, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩০

১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্তুগাল, গ্রিস এবং নরওয়েকে ছাড়িয়ে যায়। তখন বিশ্ব জিডিপিতে বাংলাদেশের অবদান ছিল শূন্য দশমিক ৪২৬ শতাংশ এবং অবস্থান ছিল ৩৯তম। এরপর ২০০৪ সালে এক ধাপ পিছিয়ে গেলেও ২০০৯ সালে ইউরোপের তিনটি অর্থনীতি সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও সুইডেনকে ছাড়িয়ে যায়। তখন শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ অবদান নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ৩৬তম।

আগামী বছরে থেকে দেশের অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, ২০২৫ সাল থেকে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়তে শুরু করবে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করবে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও অবদান বাড়বে বাংলাদেশের। এর ফলে ২০২৮ সাল নাগাদ বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ১৯তম। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিকের বৈঠকের জন্য প্রস্তুতকৃত ২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের এপ্রিল সংস্করণে বাংলাদেশের অর্থনীতির এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক জিডিপির শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশে উন্নতি হয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ পয়েন্ট প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হয়েছে। এর ফলে ২০২৮ সালে বিশ্ব জিডিপিতে বাংলাদেশ ১ দশমিক ০১ শতাংশ অবদান রাখবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই গতিপথ অর্থনৈতিক আকারের দিক থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বের মধ্যে ১৯তম অবস্থানে নিয়ে যাবে। যার ফলে ২৫তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। আইএমএফ মনে করে, বাংলাদেশের জিডিপি আগামী পাঁচ বছরে ২৪৫ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের এই গতিপথ অর্থনৈতিক আকারের দিক থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বের মধ্যে ১৯তম অবস্থানে নিয়ে যাবে। আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ইরান, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ৬৯১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে, যা গত বছরের ৪৪৬ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। মাথাপিছু জিডিপি ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ক্রয় ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) ডলারের ওপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মূল্য ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। আইএমএফ বলছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম হবে। তাদের হিসাবে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে ২০২৫ সাল থেকে আবার বাড়তে শুরু করবে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি। সংস্থাটির হিসেবে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। আর ২০২৮ এবং ২০২৯ সালে হতে পারে ৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৪ সালে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে। অর্থাৎ চলতি বছর দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকলেও ২০২৮ এবং ২০২৯ সালে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি কমে সাড়ে ৫ শতাংশে নেমে আসবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উন্নতি হবে। যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও বাংলাদেশের অবদান বাড়বে। এ কারণেই বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশর অবস্থানেরও উন্নতি হবে বলে মনে করে আইএমএফ।

আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালে শূন্য দশমিক ৩৭৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪৪তম। কিছু ওঠানামা থাকলেও ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় একই জায়গায় ছিল। ১৯৯৮ সালে ইউক্রেন ও রোমানিয়াকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ৪২তম স্থান অর্জন করে।

১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্তুগাল, গ্রিস এবং নরওয়েকে ছাড়িয়ে যায়। তখন বিশ্ব জিডিপিতে বাংলাদেশের অবদান ছিল শূন্য দশমিক ৪২৬ শতাংশ এবং অবস্থান ছিল ৩৯তম। এরপর ২০০৪ সালে এক ধাপ পিছিয়ে গেলেও ২০০৯ সালে ইউরোপের তিনটি অর্থনীতি সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও সুইডেনকে ছাড়িয়ে যায়। তখন শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ অবদান নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ৩৬তম।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article