ড. ইউনূসের পক্ষে আইনকানুন ও যুক্তির ব্যবহার নেই, আছে আবেগের বাড়াবাড়ি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০১:৪৪, বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪, ২১ চৈত্র ১৪৩১

পৃথীবিতে অনেক নোবেল লরিয়েটকে তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি পেয়েছেন। স্ব স্ব দেশের ধারা অনুযায়ী সেই শাস্তি কার্যকরও হয়েছে। এখন কেউ যদি আদালতের রায় পর্যবেক্ষণ করে ইউনূসের এই শাস্তি বা অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে চায় সেটা করতেই পারেন। তবে তারা ভালো করেই জানেন আইনের ধারায় ইউনূসকে নির্দোষ প্রমাণ করা সম্ভব নয়।


 

 

 

দেশে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবেন এমন একটা অংশের মানুষের ধারণা  প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে যা হচ্ছে তা প্রতিহিংসামূলক। সকলে আবেগের বশবর্তী হয়ে এটাও বলে থাকেন যে তিনি একজন নোবেল লরিয়েট, যা দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও সম্মানের। সুতরাং এমন একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে হয়রানি করা মোটেও উচিৎ না।যদিও সরাসরি কেউ এটা বলছেন না যে তিনি আইনের ঊর্ধ্বে,তবে ইশারা ইঙ্গিতে বা কখনো কখনো স্পষ্টতই আবেগতাড়িত কথার ফুলঝুরিতে একথার স্পষ্ট প্রতিধ্বনি শোনা যায় বিদেশিদের মুখে।

ধরে নেওয়া যাক, ড. ইউনূস অপরাধী নন, আইন ভঙ্গ করেননি। প্রচলিত আইনের ধারা ঠিক হয়নি, শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করেননি। তাদের লাভ্যাংশের প্রাপ্য টাকা আত্মসাৎ করেননি, তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা ঠিক হয়নি বা তিনি অপরাধী না, তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের কোনো কথা বলছেন না কেন ইউনূসপন্থীরা। উপরন্তু তিনি যে অপরাধী না এটা প্রমাণ করার পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য বা উপাদানও কেউ দেখাতে বা প্রদান করতে পারেননি কেন? শুধু আবেগী বার্তায় কি আইন আদালত চলে? নাকি দেশের আইন আদালতও তার জন্য প্রযোজ্য নয়? এসব কথাই হয়তো বলতে চেয়েও সরাসরি বলতে পারছেন না তারা।তাই একসুরে  সবাই 'নোবেল লরিয়েট'র গানই গেয়ে চলেছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, নোবেল লরিয়েটরা কি আইনের ধারা লঙ্ঘন করতে পারেন? সংবিধান লঙ্ঘন করতে পারেন? অবশ্যই না। কিন্তু এই অপরাধগুলোই অহরহ করেছেন ড. ইউনূস। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা প্রমাণিত এবং দিবালোকের মতো সত্য।

সুতরাং বাংলাদেশের জন্য তিনি যত বড়ই কিছুই বয়ে আনুক না কেন পৃথীবিতে অনেক নোবেল লরিয়েটকে তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি পেয়েছেন। স্ব স্ব দেশের ধারা অনুযায়ী সেই শাস্তি কার্যকরও হয়েছে। ব্যতিক্রম হয়নি বাংলাদেশেও। এখন কেউ যদি আদালতের রায় পর্যবেক্ষণ করে ইউনূসের এই শাস্তি বা অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে চায় সেটা করতেই পারেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এমন আহবান জানিয়েছিলেন ইউনুসের বিদেশী বন্ধুদের কিন্তু তারা তাতে সাড়া দেননি।কারণ তারা ভালো করেই জানেন  আইনের ধারায় ইউনূসকে নির্দোষ প্রমাণ করা সম্ভব নয়।আর একারণেই তারা বারবার গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে আবেগী ভাষায় বিবৃতি প্রদানের বাইরে কার্যত কোনো কিছুই প্রমাণ করতে পারছেন না। তারা সেপথেই হাঁটছেন না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ড. ইউনূস যেসব অপরাধ করেছেন এগুলো প্রমাণের জন্য আদালতেরও প্রয়োজন পড়ে না। কারণ তিনি নিজে স্বীকার করেছেন কর ফাঁকি দিয়েছেন। এক প্রতিষ্ঠানের অর্থ অন্য প্রতিষ্ঠানে ট্রান্সফার করেছেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যেসব প্রতিষ্ঠানে অর্থ ট্রান্সফার করেছিলেন সেগুলো ছিল অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। সেখানে কোনো কর দিতে হয় না। এর ফলে একদিকে তিনি ব্যবসা করেছেন, আরেকদিকে তিনি কর মুক্ত থেকেছেন। কিন্তু অপরাধতো অপরাধই। নিয়ম অনুযায়ী, কর জনগণের সম্পদ। এর জন্য তাকে সেই কর পরিশোধও করতে হয়েছে। কাজেই ড. ইউনূস একজন নোবেল লরিয়েট এসব আবেগী কথা না বলে আইন ও যুক্তি প্রয়োগ করে তিনি যে অপরাধ করেননি, তিনি কিভাবে নির্দোষ সেগুলোই ধরিয়ে দেওয়া উচিৎ বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Share This Article