রিজার্ভের পরিমাণ ১ বিলিয়নের নিচে নামবে, তথ্যটি কতুটুক সত্য

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:০৬, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩, ৩ কার্তিক ১৪৩০
  • যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সুদের হার বেড়ে গেছে
  • প্রবাসীরা ওয়েজআর্নার্স বন্ড ভেঙ্গে ফেলছেন
  • ডলারের বিনিময় রেট বেড়ে গেছে
  • অনেক স্বল্পমেয়াদী ঋণ আগেই পরিশোধ করে দেয়া হচ্ছে
  • রিজার্ভে নেতিবাচক প্রবণতা তৈরি হয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আকার ক্রমাগত কমছে। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৩.০৬ বিলিয়ন ডলার। দুই বছর আগে যা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলার। বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। কেন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। আবার কেউ কেউ বলে বেড়াচ্ছেন রিজার্ভ ১ বিলিয়নে নেমে আসবে। সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো এসব তথ্য কতটুক সত্য এমন প্রশ্ন করেছেন কেউ কেউ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দুই বছর আগে অনেক আমদানি ব্যয় মেটানো হয়নি। তবে গত দুই বছর ধরে প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মতো আমদানি ব্যয় হয়। এই পার্থক্যের পর প্রতিমাসে গড়ে এক বিলিয়ন ডলারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ কমছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে গেছে। এমনকি যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ওয়েজআর্নার্স বন্ডে বিনিয়োগ করতেন, অনেকে ভেঙ্গে ফেলছেন। ডলারের বিনিময় রেট বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক স্বল্পমেয়াদী ঋণ আগেই পরিশোধ করে দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে রিজার্ভে নেতিবাচক প্রবণতা তৈরি হয়েছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। একদিকে আমদানি ব্যয় হলেও অন্যদিকে রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক ঋণের অর্থও রিজার্ভে যুক্ত হচ্ছে বলেও জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপরে থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের নেট রিজার্ভ ২৩.০৬ বিলিয়ন ডলার হলেও মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যা দিয়ে পাঁচ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এই বিবেচনায় বড় কোনো ঘাটতির সম্ভাবনা তৈরি হতেও দুই বছরের বেশি সময় লাগবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নিয়ম হলো, রিজার্ভের ক্ষেত্রে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো সক্ষমতা থাকতে হবে, যা বাংলাদেশের অনেক বেশি আছে। করোনা মহামারির কারণে আটকে থাকা বড় বড় পেমেন্ট দেয়া হয়েছে, ফলে আগের মতো এখন রিজার্ভ এতো বেশি কমছে না। এছাড়া রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ও নিয়মিত আসছে।

রিজার্ভকে ইতিবাচক ধারায় ফেরাতে যা যা করার ছিল, সবই সরকার করেছে। সরকারের নেয়া নানামুখী পদক্ষেপ এর মধ্যেই রিজার্ভ কমার হার কমে এসেছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। এর মধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদেরও উন্নতি ঘটবে। রিজার্ভ কমে যাচ্ছে বা ১ বিলিয়নের নিচে নেমে আসবে এমন গুজব যারা ছড়াচ্ছে তারা না জেনেই ছড়াচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

Share This Article