৯ মাসে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:০০, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩০

ঋণ গ্রহণের জন্য যেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিতে যেতে হয়, এবার সেই প্রস্তুতি ভালো ছিল। এ কারণ অর্থবছরের শুরু থেকে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে অনেক প্রকল্পের ঋণ চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) উন্নয়ন সহযোগীদের সুদ বাবদ ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। বাংলাদেশ এই সময়ে শুধু সুদ বাবদ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছে ১০৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। এ হিসেবে সুদ পরিশোধ বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। অর্থাৎ দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে সুদ পরিশোধের পরিমাণ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, বাজারভিত্তিক ঋণের ওপর নির্ভরতার কারণেই বেড়েছে সুদ পরিশোধের ব্যয়। টাকার অবমূল্যায়ন এবং সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) সুদহার বাড়ার ফলে এই ধরনের ঋণ আরো ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সুদহার বেড়েছে। তারা বলেন,  ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সোফর বেড়েছে। বর্তমানে সোফর সুদহার ৫ শতাংশের বেশি। যা এই যুদ্ধের আগে ১ শতাংশের কম ছিল।

বাংলাদেশ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে যে ঋণ পায় তার প্রায় ৭৫ শতাংশ বাজারভিত্তিক ঋণ। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে বাজারভিত্তিক সুদে ঋণ নেয়। বিশ্বব্যাংক থেকেও স্বল্প পরিসরে বাজার-ভিত্তিক ঋণ নেয় বাংলাদেশ। এদিকে সুদ পরিশোধ বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়ে হয়েছে ২৫৭ কোটি ডলার হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭৩ কোটি ডলার।  এর মধ্যে বিভিন্ন ঋণের আসল পরিশোধ করা হয়েছে ১৫১ কোটি ডলার।

ইআরডির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে আসল ও সুদ মিলিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়ে ৩৫৬ কোটি ডলার হতে পরে।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৭২৪ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি। ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, ঋণ গ্রহণের জন্য যেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিতে যেতে হয়, এবার সেই প্রস্তুতি ভালো ছিল। এ কারণ অর্থবছরের শুরু থেকে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে অনেক প্রকল্পের ঋণ চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে।

চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ১০ দশমিক ১৯৪ বিলিয়ন ডলার  প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্য রয়েছে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে এডিবির কাছ থেকে। এই সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া গেছে ২ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি।

এছাড়া, জাপানের কাছ থেকে ২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার এবং বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক অর্থছাড় হয়েছে ৫ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে এডিবি।

সংস্থাটি অর্থছাড় করেছে ১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। জাপান ছাড় করেছে ১ দশমিক ৩৫৮ বিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংক করেছে ৯৬৭ মিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ৮০৭ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং চীন ৩৬১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article