সারাদেশে হিটস্ট্রোকে ৬ জনের মৃত্যু
চলমান তাপপ্রবাহে সারাদেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তীব্র গরমে নাজেহাল হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই তাপপ্রবাহ সহ্য করতে না পেরে সারাদেশে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। রোববার (২৮ এপ্রিল) সারাদেশে হিটস্ট্রোকে ৬ জন মারা গেছেন।
চট্টগ্রামে হিট স্ট্রোকে মাওলানা মো. মোস্তাক আহমেদ কুতুবী আলকাদেরী (৫৫) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক, রাজশাহীতে দিলীপ বিশ্বাস (৩৫), নরসিংদীতে মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন মিয়া (৭২) এবং যশোরে আহসান হাবীব (৩৭) নামে এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম নগরের বাসা থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে মাওলানা মো. মোস্তাক আহমেদ কুতুবী হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
তিনি বোয়ালখালী উপজেলার খিতাপচর আজিজিয়া মাবুদিয়া আলিম মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে রাজশাহীতে হিটস্ট্রোকে দিলীপ বিশ্বাস (৩৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি।তিনি রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার দামকুড়া থানার কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দিলীপ বিশ্বাস সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন। রোববার সকালে হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মুহূর্তের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তাই তারা ধারণা করছেন, বৈশাখের এই তীব্র গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে যশোরে অব্যাহত তাপ প্রবাহে হিটস্ট্রোকে আহসান হাবীব (৩৭) নামে এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি যশোর আমদাবাদ হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
এ নিয়ে যশোরে হিট স্ট্রোকে তিন জনের মৃত্যু হলো। এর আগে যশোর সদর ও মনিরামপুরে একজন করে হিট স্ট্রোকে মারা যান।
আমদাবাদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এ জেড এম পারভেজ মাসুদ বলেন, শিক্ষক আহসান হাবীব সকালে মাঠে কাজ করে ৯টার দিকে স্কুলে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া নরসিংদীতে হিটস্ট্রোকে আদালত প্রাঙ্গণে সুলতান উদ্দিন মিয়া (৭২) নামে এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে তার মুত্যু হয়। তিনি নরসিংদী কোর্টে আইনজীবীর সহকারী (মুহুরি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, মৃত সুলতান উদ্দিন মিয়া সকালে প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে বের হয়ে নরসিংদী কোর্টে যান। কোর্টে কাজ করার সময় দুপুরে তার বুকে ব্যাথা অনুভব হয়। পরে সে আদালতের মসজিদের সামনে এলে পড়ে যান। লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আর মাদারীপুরে তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে দুইজন মারা গেছেন। নিহতদের একজন খুচরা ব্যবসায়ী ও অপরজন কৃষক।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে জেলার কালকিনি উপজেলার পশ্চিম শিকারমঙ্গল এলাকায় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শাহাদাত সর্দার (৫৫) ও ২টার দিকে ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের মোসলেম ঘরামি (৬০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রচন্ড গরমে দুইজন মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।