আইএমএফের প্রতিবেদন

বিশ্বের গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে বাংলাদেশে কম

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:৩২, বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ৩ কার্তিক ১৪২৯

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য এবং স্থানীয় মুদ্রার দরপতনে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ বাজার পরিচালনায় পার্থক্যের কারণে একেক দেশে মূল্যস্ফীতির প্রভাবে ভিন্নতা রয়েছে।

 

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে আঞ্চলিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

‘কোপিং উইথ শকস, মাইগ্রেশন অ্যান্ড রোড টু রিসাইলিয়েন্স’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববাজারে দীর্ঘ সময় ধরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে তা ভোক্তা মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলে।

তবে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রভাব স্থানীয় বাজারে কী পরিমাণে পড়বে তার অনেক কিছু নির্ভর করে স্থানীয় বাজারে মুদ্রার বিনিময় হার, কর, ভর্তুকি ইত্যাদির ওপর। যেমন, বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক হারে বাড়লেও সে তুলনায় এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে কম পড়েছে। কারণ এ দেশে জ্বালানিতে ভর্তুকি দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেরই মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে। এ বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে শ্রিলঙ্কার মুদ্রার দরপতন ঘটে ৮০ শতাংশ এবং পাকিস্তানের মুদ্রার দরপতন হয় ৩৬ শতাংশ। এ ছাড়া দরপতন ঘটেছে বাংলাদেশি টাকা, ভারতীয় রুপি ও মালদ্বীপের রুপিয়ারও।

গড় হিসাবে দেখা যায়, স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় হার হ্রাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি যৌথভাবে এ অঞ্চলের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে অর্ধেক দায়ী। সাম্প্রতিক ভারতের বাজারেও ডলারের বিপরীতে রুপির দর পতন মূল্যস্ফীতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। 

এর পাশাপাশি তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী দেশটিতে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো মালদ্বীপও জ্বালানির নেট আমদানিকারক। দেশটির মুদ্রার দরপতন মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বিশ্ববাজারে মূল্যস্ফীতি হলেও স্থানীয় বাজারে এর প্রভাবে ভিন্নতা রয়েছে বলে মনে করে আইএমএফ। জানুয়ারি ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত আইএমএফের দেওয়া বৈশ্বিক পাঁচটি পণ্যের মূল্যস্ফীতির হারে দেখা যায়, গমের গড় মূল্যস্ফীতি বিশ্ববাজারে যখন ২২ শতাংশ, তখন একই পণ্যের মূল্যস্ফীতি ভারতে ৫.২ শতাংশ, বাংলাদেশে ১১.৪ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ১৬.৮ শতাংশ।

ডিজেলের মূল্যস্ফীতি বিশ্ববাজারে যখন ৪৭ শতাংশ, তখন ভারতে ১০.৩ শতাংশ, বাংলাদেশে ৭.৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ২৫.৬ শতাংশ। ভোজ্য তেলের মূল্যস্ফীতি বিশ্ববাজারে যখন ২৯.৪ শতাংশ, ভারতে তখন ১১.৯ শতাংশ, বাংলাদেশে ১৫.৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ১৭.২ শতাংশ। 

চিনির গড় মূল্যস্ফীতি বিশ্ববাজারে ২৪.৬ শতাংশ, ভারতে ১০.২ শতাংশ, বাংলাদেশে ১৬.৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ১৮.৮ শতাংশ।

আইএমএফ জানায়, বৈশ্বিক মন্দায় পণ্যের চাহিদা কমবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে। এর প্রভাব পড়বে রপ্তানিনির্ভর এশিয়ার অর্থনীতিতে। ফলে চলতি অর্থবছরে অন্য দেশগুলোর পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমবে বাংলাদেশেরও।

 চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৬ শতাংশ। যেখানে ২০২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭.২ শতাংশ। এর পাশাপাশি চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হবে ৯.১ শতাংশ।

Share This Article