ঢাকা স্টেডিয়ামের ঈদ জামাত ও সেকালের ঈদ

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৪৬, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪, ২২ চৈত্র ১৪৩১

‘বাংলাদেশে যেসব লোকমেলা রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে মন্দির ও হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সম্পর্ক বেশি। মুসলমানদের ধর্মীয় উত্সবে একমাত্র মেলা বসত চকবাজারে, যেটা তখন ঈদমেলা নামে পরিচিত ছিল। ঢাকা ও আশপাশের লোকশিল্পীরা সারা বছর এই মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকতেন। তাদের পণ্য এখানে এনে বিক্রি করতেন।’

বর্তমান জাতীয় ঈদগাহের আগে ঢাকা শহরে ঈদ জামাতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম (তখনকার ঢাকা স্টেডিয়াম) এলাকার খোলা মাঠ। এ বিষয়ে বিবরণ পাওয়া যায় সৈয়দ আলী আহসানের ‘ষাট বছর আগের ঢাকা’ বইয়ে। তিনি সেই ঈদগাহে আসার স্মৃতিচারণ করেছেন এভাবে—‘সকালবেলা থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে এলাকাবাসী পুরুষরা নতুন নতুন পোশাক পরে বিরাট নিশান বহন করে ঢোল বাজাতে বাজাতে মিছিল করে ঈদের ময়দানে উপস্থিত হতো।’


ঢাকায় প্রথম নারীদের ঈদের জামাত হয়েছে ব্রিটিশ আমলে। এ প্রসঙ্গে ‘ঢাকার ইতিবৃত্ত: ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’ বইয়ে মোহাম্মদ আবদুল কাইউম লিখেছেন—‘১৯৩৭ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ইমামতিতে কার্জন হলে মহিলাদের প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।’

বাংলাদেশের উত্সব-পার্বণ গবেষক ইমরান উজ-জামান জানান, ‘বাংলাদেশে যেসব লোকমেলা রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে মন্দির ও হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সম্পর্ক বেশি। মুসলমানদের ধর্মীয় উত্সবে একমাত্র মেলা বসত চকবাজারে, যেটা তখন ঈদমেলা নামে পরিচিত ছিল। ঢাকা ও আশপাশের লোকশিল্পীরা সারা বছর এই মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকতেন। তাদের পণ্য এখানে এনে বিক্রি করতেন।’

তবে ঈদের অনেকদিন আগে থেকেই ঢাকা স্টেডিয়ামের আশেপাশেও ঈদের বাজার বসত। সেখানে পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই পাওয়া যেত। ঈদের দিন ঈদ জামাতের আশেপাশে খেলনা, বাঁশি ও শিশুদের মনোরঞ্জন সামগ্রীর পসরা বসত। যেটা এখন সারাদেশেই দেখা যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, এখন তৈরি পোশাক কেনা হলেও আগে প্রচলন ছিল ঈদের পোশাক দর্জি দিয়ে বানানো। থান কাপড় কিনে আনা হতো। আবার বোন বা বান্ধবীরা মিলে একই নকশা, একই রঙের পোশাক তৈরি করার প্রচলন ছিল।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article