যেভাবে ইউনূসের ‘চতুর ঋণ’র ফাঁদে পড়তো গ্রামীণ নারীরা
আইন অনুযায়ী, গ্রামীণ ব্যাংকের ৭৫ শাতাংশ শেয়ারের ভাগ পাবেন গ্রামীণ নারীরা। কিন্তু এটি যে নিছক একটি সান্তনা ছিল মাত্র ইতোমধ্যেই তা জেনে গেছেন সবাই। কারণ এসব নারীদের কাছে গ্রামীণ ব্যাংক মানে ঋণ, সপ্তাহ গেলে কিস্তি, আর কিস্তি দিতে না পারলে অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়।
একশ টাকা জমা দিলে প্রতিবছর ৩০ টাকা করে লাভ পাবে। কিন্তু একশ টাকা অক্ষত থাকবে। যে যত বেশি অর্থ জমা রাখবে সে ততো বেশি টাকা লাভ পাবে। কিন্তু মেডাম এই বিষয়টা বুঝিয়ে দিলেও আজ পর্যন্ত আসলতো দূরে থাক, কোনো লাভ পাইনি। অথচ যারা এই টাকা জমা রাখতো না, তারা ঋণও পেত না। উল্টো সপ্তাহিক কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য অনেক চাপ আসতো। সময় মতো টাকা পরিশোধ না করতে পারলে করতো নানা অপমান।
এভাবেই ড. ইউনূসের ‘চতুর ঋণ’ ফাঁদের গল্প শোনালেন গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সাধারণ ঋণ গ্রহীতা নারী। সাবলম্বী হওয়ার আশায় তার মতো এমন অসংখ্য নারী এভাবেই প্রতারিত হয়েছেন দিনের পর দিন।
১৯৮৩ সালে বৈধ আইনে রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরিদ্র নারীদের ঋণ সুবিধা দেওয়ার দর্শন নিয়ে যাত্রা শুরু করে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। আইন অনুযায়ী, গ্রামীণ ব্যাংকের ৭৫ শাতাংশ শেয়ারের ভাগ পাবেন গ্রামীণ নারীরা। কিন্তু এটি যে নিছক একটি সান্তনা ছিল মাত্র ইতোমধ্যেই তা জেনে গেছেন সবাই। কারণ এসব নারীদের কাছে গ্রামীণ ব্যাংক মানে ঋণ, সপ্তাহ গেলে কিস্তি, আর কিস্তি দিতে না পারলে অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়।
এদিকে সুদ ও সার্ভিস চার্জের হার মাত্রাতিরিক্ত হওয়া সত্ত্বেও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ আদায়ের হার শতকরা ৯৫ ভাগ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত। অথচ ব্রাক, প্রশিকা ও আশার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কম সুদে ঋণ দিয়েও আদায়ের হার ৭০ শতাংশের বেশি নয়। গ্রামীণের ঋণের সুদের হার বেশি হওয়া সত্ত্বেও আদায়ের এই উচ্চ সাফল্যের পেছনে প্রতিষ্ঠানটির শোষণের ইতিহাসকেই চিহ্নিত করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, ঋণ আদায়ের কড়া পদ্ধতি ও এমন শোষণের ভয়েই গ্রামীণের ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে আরও অন্য সংস্থা থেকে ঋণ নেয় ঋণ গ্রহীতারা। তাতে দরিদ্ররা আরও দরিদ্র হয়েছে। এই কৌশল আধুনিক সভ্যতার জন্য চরম লজ্জাজনক বলেও জানান বিশ্লেষকরা।