কপি শপের সাথে বিড়ালের এতিমখানা ‘মিউ ইয়র্ক’

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৪০, শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪, ৯ চৈত্র ১৪৩০

দিনাজপুরে ব্যতিক্রমী কফি শপের সাথে বিড়ালের এতিমখানা ‘মিউ ইয়র্ক’ চালুর পর ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। স্বভাবগত কারণে প্রাণীদের প্রতি মানুষের ভালবাসা কাজ করে। আর এই ভালবাসা থেকে বিড়ালের জন্য এতিমখানা করে প্রশংসায় ভাসছেন এক যুবক। যেখানে রাস্তার আহত বিড়াল চিকিৎসার পাশাপাশি দত্তক নেওয়া হয়। মিউ ইয়র্ক নামের এই এতিমখানায় রয়েছে কফি শপ।

 

দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়ে মিউ ইয়র্ক কফি শপে গেলে দেখা যাবে আলাদা এক রুমে সারি সারি সাজানো বিড়ালদের থাকার ঘর। রয়েছে বিড়ালদের দোলনা ও চেয়ার। দৃষ্টিনন্দন আদলে সাজানো রুমটি শুধুই বিড়ালদের বিলাসবহুল জীবন-যাপনের জন্য। যেখানে সময়মত খাবারের পাশাপাশি রয়েছে স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যবস্থা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই কফি শপ ‘মিউ ইয়র্ক’। বিড়াল প্রদর্শনী রুমের পাশেই রয়েছে কফি শপ। মিউ ইয়র্ক নামের এই কফি শপ ও বিড়ালের এতিমখানা চলতি মাসে উদ্বোধনের পর থেকেই সাড়া ফেলেছে।

বর্তমানে এতিমখানাটিতে ২০টির বেশি দেশি-বিদেশি বিড়াল রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এই প্রথম কোনো কফি শপের সাথে বিড়ালদের বসবাস। প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসার জায়গা থেকে এমন উদ্যোগ বলে জানান মিউ ইয়র্ক কেট ক্যাফের স্বত্বাধিকারী ও উদ্যোক্তা মাহারাজ মুনজারিন আল মতি (টিমান)।
মাহারাজ মুনজারিন আল মতি (টিমান) জানান, আমাদের চারপাশে অনেক অভুক্ত বিড়াল ঘোরাফেরা করে। প্রয়োজনীয় পরিচর্যা ও খাবারের অভাবে কষ্টে দিন যাপন করে। মানুষ কোনো ভাবে আঘাত পায়, সেই ব্যথার যন্ত্রনা যদি আমরা অনুভব করে থাকি। একইভাবে রাস্তায় কুকুর-বিড়ালেরাও কষ্ট অনুভব করে। আমাদের উচিত সেইসব কুকুর-বিড়ালের পাশে দাঁড়ানো। এরই ধারাবাহিকতায় রাস্তায় আহত-অসুস্থ বিড়ালের চিকিৎসার পাশাপাশি দত্তক দেওয়া-নেওয়ার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে এই বিড়ালের এতিমখানা। বিড়াল প্রদর্শনী রুমের পাশে রয়েছে কফি শপ। কফি খেতে আসা সাধারণ মানুষের কাছে বিড়ালের খোঁঁজ পেলে দত্তক নেওয়া হয়। আবার এখান থেকে সরবরাহ করা হয় বিড়ালের খাবার।

মিউ ইয়র্ক কেট ক্যাফের ম্যানেজার ও ক্যাট ইনচার্জ বিলাশ দাস জানান, এই মিউ ইয়র্ক বিড়াল থিমের একটি কফি শপ। এখানে বিদেশি বিড়ালও আছে। যে কেউ এসব বিড়ালকে কোলে নিতে পারবেন, আদর করতে পারবেন। বিড়ালের চিকিৎসা থেকে সবকিছু পাওয়া যায়। আমরা চাই সবাই বিড়াল পালন করুক। এদের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পাক। রাস্তার সব বিড়াল-কুকুরদের সেবার আওতায় আনার চেষ্টা করবো।

কপি শপে আসা কয়েকজন স্কুল শিক্ষার্থী জানায়, প্রথমে বিড়াল দেখে ভয় লাগলেও কোলে তোলার পর ভালো লাগলো। আমি কখনও যদি পারি বিড়ালের সহায্য করার চেষ্টা করবো।

কপি শপে আসা হাসমিন লুনাসহ কয়েকজন বলেন, উত্তরবঙ্গে সম্ভবত এটিই প্রথম কোন কফি হাউজের সাথে বিড়ালের বসবাস। এখানে শিশুরাও খুব আনন্দ পাবে, ভালোবাসবে এইসব প্রাণীর প্রতি। রাস্তার অনেক অবহেলিত পশু যেমন বিড়াল, কুকুর আছে যারা তাদের ক্ষুধা বা কষ্টের কথা বলতে পারে না আমাদের সবার উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। এদের পাশে দাঁড়ালে বেশি কিছু খরচ হয় না। অন্তত নিজের মনে তৃপ্তি আসবে যে আমি তো কারো পাশে দাঁড়াতে পেরেছি।

উল্লেখ্য, মিউ ইয়র্ক এর উদ্যোক্তা মাহারাজ মুনজারিন আল মতি (টিমান) দিনাজপুর শহরের পাটুয়াপাড়া এলাকার নিবাসী। ছোটবেলা থেকেই বিড়াল পালনের প্রতি তার শখ। ঢাকায় পড়ালেখা শেষ করে দিনাজপুরে এসে ব্যবসায়িক উদ্যোগের পাশপাশি প্রতিবেশী বিলাশ নামে আরেক যুবকের সহযোগিতায় শখকে পূর্ণতা দিতে গড়ে তুলেছেন বিড়ালদের নিরাপদ এ আশ্রয়স্থল, নাম দিয়েছেন ‘মিউ ইয়র্ক’। 

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article