লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩৭, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১০ ফাল্গুন ১৪৩০

এ উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের রয়্যাল বারা অব কেন্জিংটনে এক কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজিত 'মাল্টিলিংগুয়াল এডুকেশন, দ্য পিলার অব লার্নিং' শীর্ষক এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে উইকে ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন, ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধিবর্গ এবং যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতগণ বক্তব্য রাখেন। 

বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও বায়ান্নর অমর ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘বাংলা ভাষা শহিদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করেছে লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন। 

এ উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের রয়্যাল বারা অব কেন্জিংটনে এক কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজিত 'মাল্টিলিংগুয়াল এডুকেশন, দ্য পিলার অব লার্নিং' শীর্ষক এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে উইকে ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন, ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধিবর্গ এবং যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতগণ বক্তব্য রাখেন। 

এরপর বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীরা মহান ভাষা শহিদদের উৎসর্গ করে নিজ নিজ ভাষায় মনোজ্ঞ সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন। দূতাবাসগুলোর মধ্যে ছিলো ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইউক্রেন, সারবিয়া, মালয়েশিয়া, মরোক্কো, সাইপ্রাস ও শ্রীলঙ্কা। এছাড়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশু-কিশোর শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতিসংঘের ছয়টি ভাষায় 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' অমর সঙ্গীতটির পরিবেশনা ছিলো মূল আকর্ষণ।

ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ লন্ডনে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষীর পাঁচ শতাধিক মানুষ বাংলা ভাষা শহিদদের প্রতি পরম শ্রদ্ধায় এই বিশেষ আলোচনা ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। 

london 2

বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম তার স্বাগত বক্তব্যে ১৯৫২-এর সকল ভাষা শহিদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত ঐতিহাসিক বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় বক্তব্য রেখে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উন্নীত করার কথা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন তিনি। 

হাইকমিশনার মহান একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পাওয়া, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগসহ বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

হাইকমিশনার যুক্তরাজ্যে প্রায় প্রচলিত ৩০০টি মাতৃভাষার মধ্যে গ্রেটার লন্ডনে বাংলা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কথ্য ভাষা উল্লেখ করে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য লন্ডন মেয়রের প্রতি আহবান জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানে উইকে ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর প্রধান নির্বাহী জেমস ব্রিজ, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন কাউন্সিল চেয়ার ভিক্টর জিমেনেজ, যুক্তরাজ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইউন ইওচিয়ল, বাহামার হাইকমিশনার প’ল এ গোমেজ, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার সুজিত ঘোষ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া রিজিওন্যাল ম্যানেজার মিজ সাম হারভি এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বক্তব্য রাখেন। 

london 3

অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতীকী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ উপলক্ষে সকালে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ এবং ভাষা শহিদদের এবং বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। 

 

এর আগে মহান একুশের প্রথম প্রহরে হাইকমিশনার ও টাওয়ার হ্যামলেটস-এর মেয়র লুৎফুর রহমান একসাথে এবং পরে মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে পূর্ব লন্ডনের শহিদ আলতাব আলি পার্কে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বায়ান্নোর ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

Share This Article