২০০০ টাকার কর বিভ্রান্তি: না বুঝেই প্রতিক্রিয়ায় সয়লাব ফেসবুক!
এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা এনবিআর’র ‘২০০০ টাকা কর’ নিয়েও ছড়ানো হচ্ছে মিথ্যাচার। আর কেউ কেউ না বুঝেই জানান দিচ্ছেন নানান প্রতিক্রিয়া।
দেশের বেশিরভাগ মানুষই এখন ব্যবহার করছেন ফেসবুক। এখানে সত্যের চেয়ে মিথ্যাকেই লুফে নেন অনেকে। গুজবের হাত থেকে রেহাই পান না খ্যাতিমান ব্যক্তিও। এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও পড়তে হয় বিভ্রান্তিতে। এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা এনবিআর’র ‘২০০০ টাকা কর’ নিয়েও ছড়ানো হচ্ছে মিথ্যাচার। আর কেউ কেউ না বুঝেই জানান দিচ্ছেন নানান প্রতিক্রিয়া। তবে অতীতের মতো বিএনপি-জামায়াত চক্রই এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মনে করছে একটি মহল।
জানা যায়, আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। রাজস্ব আদায় বাড়াতে বেশকিছু সেবা পেতে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর দেয়ার প্রস্তাবও এসেছে বাজেটে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিনধারীদেরই গুনতে হবে এই কর। তবে করযোগ্য আয় না থাকলে টিনধারীকেও কর দেয়ার প্রয়োজন নেই। এছাড়া নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে দিতে হবে না কর।
দুই হাজার টাকা ন্যূনতম আয়কর তাদেরেই দিতে হবে যারা জমি কিনবেন, মহানগরে বাড়ি বানাবেন কিংবা একাধিক গাড়ি কিনবেন। একই সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনা বা ব্যাংক লোন, ক্রেডিট কার্ড নেয়া কিংবা সন্তানদের আন্তর্জাতিক কারিকুলামে অনুসৃত শিক্ষাপদ্ধতিতে পড়ালেও দিতে হবে এই কর। এছাড়া যাদের ক্ষেত্রে টিআইএন থাকা বাধ্যতামূলক সেসব শ্রেণির লোকদেরও মানতে হবে এই বিধান। তবে এর বাইরে কাউকে ২০০০ টাকা কর দিতে হবে না। অর্থাৎ কোনো সেবা নেয়ার জন্য যারা কোথাও টিআইএন সার্টিফিকেট জমা দেবেন তাদেরই এই ন্যূনতম কর দিতে হবে। অন্যথায় নয়।
তথ্যমতে, দেশে ই-টিনধারীর সংখ্যা ৮৭ লাখেরও বেশি। কিন্তু গেল এপ্রিল মাস পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিয়েছেন ৩১ লাখ ৭০ হাজার জন। অর্থাৎ ৫৫ লাখ ৩০ হাজার জনই জমা দেননি রিটার্ন। তবে প্রস্তাবিত বিধান কার্যকর হলে এখান থেকে ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা আদায় করতে পারবে এনবিআর। রিটার্ন না দিলে আবার মিলবে না ৪৪ ধরনের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা। রাজস্ব বোর্ডের এই উদ্যোগ বেশ সাড়া মিলবে বলেও মনে করছেন অনেকেই।
অথচ টিআইএনের বিপরীতে দুই হাজার টাকা ন্যূনতম কর আদায়ের প্রস্তাব নিয়ে এনবিআর’র কর্মকর্তারা স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিলেও বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ফেসবুকে। বলা হচ্ছে আয় না থাকলেও সবাইকে বাধ্যতামূলক কর দিতে হবে। এনবিআর নিয়ে এসব অপপ্রচারে অনেকে না বুঝেই সায় দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নিজের টাইমলাইনেও শেয়ার করছেন। তাই এসব মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।