প্রসঙ্গ বুয়েট: ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রচেষ্টা দেশের জন্য স্থায়ী অকল্যাণ বয়ে আনবে
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকলেও বুয়েটে হিযবুত তাহরী-ছাত্র শিবিরের গোপন তৎপরতা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবির নেপথ্যেও রয়েছে সংগঠন দুটি। একটি নিষিদ্ধ সংগঠন আরেকটির মূল দলের নিবন্ধন নেই। কাজেই বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ধারা সফল হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি উঠবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করে দেশকে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।
আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল।কিন্তু বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে মর্মে সম্প্রতি আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালাত। তবে আদালতের রায়ের পরেও আবার ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে একটি পক্ষ। ২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠিও দিয়েছে তারা ৷
হঠাৎ বুয়েটের কতিপয় শিক্ষার্থী কেন ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এই দাবির পেছনে কারা ইন্ধন যোগাচ্ছে? এমন প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক ও শিক্ষাঙ্গণে।আবরার হত্যাকাণ্ডের পরে সাময়িকভাবে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।তাই সামগ্রিকভাবে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রচেষ্টাকে দেশের রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত বলছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, অবৈধ ও গোপন রাজনৈতিক সংগঠনগুলো ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সুফল ভোগ করে যা সসমগ্রীকভাবে কুফল বয়ে আনে। কারণ প্রকাশ্য রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ হলে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো সেখানে কর্ম তৎপরতা চালাতে পারে না। কিন্তু গোপনে গোপনে ইসলামের দাওয়াতের অন্তরালে বিভিন্ন ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে ধর্মান্ধ মৌলবাদী দলগুলো তাদের ডালপালা বিস্তারের সুযোগ পায়।
যেমন ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকলেও বুয়েটে হিযবুত তাহরী-ছাত্র শিবিরের গোপন তৎপরতা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবির নেপথ্যেও রয়েছে সংগঠন দুটি। একটি নিষিদ্ধ সংগঠন আরেকটির মূল দলের নিবন্ধন নেই। কাজেই বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ধারা সফল হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি উঠবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করে দেশকে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রসঙ্গত জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। একই পথে হেঁটেছেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এমনকি ২০০৭ সালে এক-এগারোর সময় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারও ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে আক্রোশে ফেটে পড়েছিল। জাতীয় নেতৃত্ব তৈরির সূতিকাগার ছাত্র রাজনীতি। আজকে যারা ছাত্রনেতা তারাই আগামীর জাতীয় নেতা। কাজেই যদি উৎসমূখ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যৎে নেতৃত্বের শুন্যতা তৈরি হবে, যা বিরাজনীতিকরণকেই উৎসাহিত করবে। এটি দেশের জন্য স্থায়ী অকল্যাণ বয়ে আনবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।