হিরো আলম সহজ নয়!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:২৬, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩, ৩ শ্রাবণ ১৪৩০

সাধারণ মানুষের সহানুভূতি কিভাবে সহজে আদায় করা যায় তা হিরো আলম এতদিনে জেনে গেছেন। আর ক্যামেরা তার অনেক দিনের চেনা। ঢাকা ১৭ আসনের নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হতে পারবেননা, এটিও তার জানাই ছিলো। তাই নির্বাচনে বিজয়ী হবার ফর্মুলায় মনোযোগী না হয়ে  সহজ চিন্তায় আলোচনায় থাকবার সহজ পথটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। তাই নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পরও বিজয়ী প্রার্থীর চাইতে তিনি তার দিকেই মিডিয়া, রাজনৈতিক অঙ্গন এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন খুব সহজেই। তার উদ্দেশ্য শতভাগ সফল হয়েছে ৷ কাজেই তাকে নিয়ে এতদিন যারা সহজ-সরল হিসেব-নিকেশ করেছিলেন, তা সঠিক নয়। কারণ হিরো আলম এত সহজ নয়।

ভোটের মাঠে কেন্দ্রের কাছাকাছি সেদিন এই ঘটনাটি না ঘটলে নিঃসন্দেহে আলোচনায় থাকতেন বিজয়ী প্রার্থী এম আরাফাত। সেটিই হবার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনসহ মিডিয়া জুড়ে ছিলেন হিরো আলম। মোক্ষম সময়ে মোক্ষম ক্লিক।

বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রের কাছে যে অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছে তার দায় সহজেই প্রধান প্রতিপক্ষ বা আওয়ামীলীগের ওপর বর্তায়, এটিই সহজ হিসেব। মানুষ ভেবেছেও তাই। কিন্তু হিরো আলম সহজ নয়, তিনি কাজ করেন সহজ হিসেবের বাইরে। নিজ হাতেই নিজের খেলার মাঠ সাজিয়েছিলেন। নিজের ঘনিষ্ঠজন, যাদের মাঝে আছেন কয়েকজন সরকারদলীয় ও বিরোধীদলের রাজনীতির সাথেও যুক্ত। বন্ধুত্বের মূল্য দিয়েছেন তারা।

মূল ঘটনা শুরুর আগেই তার আশেপাশে ক্যামেরা হাতে পজিশন ঠিক করে নেন তারই ঘনিষ্ট ইউটিউবার সহকর্মীরা। আর সেসময়েই তিনি নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে প্রায় ৬০/৭০জন সহকর্মী নিয়ে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা প্রদান করেন দ্বায়িত্বরত পুলিশ অফিসার। হট্টগোল বা ঘটনার শুরু এখান থেকেই। এর পরের ঘটনার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বরাতে দেখেছেন দেশবাসী। কিন্তু সাদা চোখে ভিডিও ফুটেজ দেখে এর পেছনের সাজানো ছক বোঝেননি অধিকাংশ মানুষ। বুঝবার কথাও নয়।

হিরো আলম যখন হামলার শিকার হন, তার সাথের ৬০/৭০ জন মানুষ হঠাৎ সরে যান, তাদের সেভাবে প্রতিরোধ করতে দেখা যায়নি কেন? তিনি মার খেয়ে যখন দৌড়াচ্ছিলেন শেষ সময় পর্যন্ত তার পাশে একজন ইউটিউবারকে ভিডিও করতে দেখা যায়, তখন হামলাকারীরা আশেপাশে না থাকলেও তিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে চলেছিলেন।

সর্বোপরি হামলার অভিযোগে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কেউই সরকারী দল বা প্রতিপক্ষের কেউ নয়,তবে আছেন একজন যুবদল কর্মী। মজার বিষয় হলো গ্রেফতারকৃতদের মাঝে একজন শ্রমিকও রয়েছেন, যিনি হিরো আলমের পূর্ব পরিচিত।

অন্যদিকে হামলার শিকার হবার পরই আলম হাসপাতালে যান। ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এরপর তিনি মহানগরে তার বাসায় যান এবং কিছুক্ষণপরেই টিকটিক শুরু করেন, যার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কথিত হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায়, এমন পরিস্থিতিতেও টিকটিক করার মানসিকতা সৃস্টি হয় কি করে? পুরো দুনিয়াটাই যেন তার সামনে ক্যামেরা। তিনিই আইন প্রণেতা হতে চেয়েছেন। এসব কিছুর সমষ্টিই বলে দেয়, হিরো আলম সহজ নয়!

Share This Article