বিসিসি নির্বাচন:সাড়া জাগিয়েছে নৌকা প্রার্থীর ইশতেহার
প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে যেভাবে স্মার্ট ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্মপরিকল্পনা সাঝিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঠিক একই আঙ্গিকে বরিশালকে গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন খোকন সেরনিয়াবাত। তাঁর ইশতেহারে সব উপাদানই বিদ্যমান রয়েছে। এতে নিঃসন্দেহে মানুষের জীবনমান বাড়বে। এর হাত ধরে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে বরিশালনগরী একধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন নগরবিদরা।
একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, পরিবেশবান্ধব স্মার্ট ও মানবিক শহর গড়ে তোলার প্রত্যাশায় শতভাগ নিষ্ঠা, সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশনকে পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বরিশাল আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। এরই মধ্যে ইশতেহারটি বরিশালের সাধারণ ভোটাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, যাকে জনবান্ধব ইশতেহার বলে আখ্যা দিয়েছেন সবাই। কারণ নগরবাসীর দীর্ঘদিনের যে চাওয়া-পাওয়া ছিল এ ইশতেহারে তার সবকিছুর প্রতিফলন ঘটেছে।
বুধবার (০৭ জুন) বরিশাল নগরের বগুড়া রোডস্থ একটি কনভেনশন হলে এই ইশতেহার ঘোষণা করেন খোকন সেরনিয়াবাত।
ইশতেহারে যা উল্লেখ রয়েছে :
* অনাকাঙ্ক্ষিত ও অযৌক্তিক হোল্ডিং ট্যাক্স পুনঃমূল্যায়ন করে কর ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনায়ন এবং ট্রেড লাইসেন্স প্রদান সহজিকরণ করে অনলাইন সেবা চালু করা হবে।
* নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারসহ নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডের ময়লা আবর্জনা যথাসময়ে অপসারণ এবং পচনশীল বর্জ্য সংগ্রহ করে জৈব সার, বায়োগ্যাস উৎপাদন এবং মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
* নগরীর খালসমূহ খননের বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার পাশাপাশি বর্ধিত এলাকায় পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান, রাস্তাঘাটের সংস্কার ও নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
*নগরীর বেলতলা ও রূপাতলী এলাকায় নির্মাণ করার পর অকেজো হয়ে পড়ে থাকা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে পূর্ণরূপে চালু করা হবে।
*পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বরিশাল নগরীকে গ্রিন সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
* নগর ভবনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ সকল ধরনের নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে চলমান অনলাইন ওয়ান-স্টপ সার্ভিস ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনা হবে
* সবার বরিশাল' নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে নগরবাসীর কাছ থেকে নাগরিক সমস্যার অভিযোগ গ্রহণ করা হবে।
* প্রতিটি ওয়ার্ডকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে বরিশালকে ডিজিটাল নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
* তরুণ সমাজের জন্য আইটি নগরী প্রতিষ্ঠাসহ ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
* জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে 'জনতার মুখোমুখি মেয়র' শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে ওয়ার্ড ভিত্তিক সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করা হবে।
* বরিশাল সিটি করপোরেশনকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
*বিভিন্ন কলোনির বাসিন্দাদের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক নগরীর বিভিন্ন সড়ক উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
* হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
*নগরীতে নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ নির্বিশেষে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে।
* তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন এবং বিদ্যমান কমিউনিটি সেন্টারগুলোর আধুনিকায়নের মাধ্যমে বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
* বরিশাল নগরীতে গ্যাস সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
* বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সহায়তা প্রদানসহ সরকার প্রবর্তিত সকল ধরনের ভাতা যথাযথভাবে বণ্টন করা হবে।
* সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অসম্প্রদায়িক নগর প্রতিষ্ঠা করা হবে।
* নগরীর বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসমূহের আধুনিকায়ন এবং ইনফেকশাস ডিজিস নিরাময় সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে।
*নগরীর স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন এবং শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নগরীতে বিনোদন কেন্দ্র ও পার্ক নির্মাণ করা হবে।
* নগরীর সব মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির ও গীর্জার উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সর্বোপরি বরিশালকে শিল্প, বাণিজ্য ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
বিশিষ্ট নগরবিদরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে যেভাবে স্মার্ট ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্মপরিকল্পনা সাঝিয়েছেন, ঠিক একই আঙ্গিকে বরিশালকে গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন খোকন সেরনিয়াবাত। তাঁর ইশতেহারে সব উপাদানই বিদ্যমান রয়েছে। এতে নিঃসন্দেহে মানুষের জীবনমান বাড়বে। এর হাত ধরে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে বরিশালনগরী একধাপ এগিয়ে যাবে বলেও জানান সবাই।
