করফাঁকি: কূটকৌশল খাটিয়েও নিস্তার পেলেন না ড. ইউনূস

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:০৫, বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

নিজের লাভের জন্যই ড. ইউনূস এসব ট্রাস্ট গড়ে তুলেছেন বলে রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মৃত্যুভয় থেকে নিজ ট্রাস্টে টাকা দেয়াটা করফাঁকি দেয়ার কৌশল বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

কখনো শ্রম আইন লঙ্ঘন, কখনো বা করফাঁকি আবার কখনো বা দুদকের মামলা। সব মিলিয়ে বেশ অস্বস্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একে একে ভারী হচ্ছে মামলার বোঝাও। এর মধ্যেই এলো দান কর ফাঁকি মামলার রায়। অসততার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই অর্থনীতিবিদকে সর্বমোট পরিশোধ করতে হবে ১৫ কোটি টাকারও বেশি। ৩১ মে এমনই রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

জানা যায়, ২০১৫ সালে ‘মৃত্যুভয়ে ভীত’ হয়েছিলেন বলে একটি নথিতে উল্লেখ করেছিলেন ড. ইউনূস। যদিও এর বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। করফাঁকি দিতে ‘মৃত্যুভয়কে’ হাতিয়ার বানিয়েই আইন ভেঙে সমাজকল্যাণ খাতের অর্থ নিজের নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান ‘ড. ইউনূস ট্রাস্ট’, ‘ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট’ ও ‘ইউনূস সেন্টারে’ দান করেন তিনি। তবে নিজের লাভের জন্যই ড. ইউনূস এসব ট্রাস্ট গড়ে তুলেছেন বলে রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মৃত্যুভয় থেকে নিজ ট্রাস্টে টাকা দেয়াটা করফাঁকি দেয়ার কৌশল বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

আদালতের বিভিন্ন সূত্র বলছে, ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ‘তিন’ করবর্ষে নিজের অর্থ নিজেকেই দান করেন ড. ইউনূস। অর্থাৎ নিজের তিন প্রতিষ্ঠানকে দান করেন ৭৭ কোটি ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এসব দানের বিপরীতে প্রায় ১৬ কোটি টাকা দানকর চেয়েছিল এনবিআর। এজন্য ড. ইউনূসকে নোটিশও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল করলেও খারিজ করে দেন আদালত। আপিল খারিজ হতেই প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা আয়কর পরিশোধ করেন এই নোবেলজয়ী। বাকি কর না দিতে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফের তিনটি মামলা করেন ড. ইউনূস। চলতি মাসের ২৩ মে এসব মামলার শুনানিতে উঠে আসে বিচিত্র তথ্য। এর প্রেক্ষিতেই ৩১ মে তার বিরুদ্ধে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে করফাঁকি প্রমাণিত হওয়ায় এনবিআরকে পরিশোধ করতে হবে বকেয়া ১২ কোটি টাকারও বেশি। মামলা পরিচালনার শুরুতে নথিভুক্ত করার সময় তিন কোটি টাকা জমা দিতে হয় তাকে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১৫ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, মৃত্যুচিন্তায় নয়, কর ফাঁকি দিতেই এমন কৌশল বেছে নেন ড. ইউনূস। ১৯৯০-এর দানকর আইন অনুযায়ী কেউ গুরুতর আহত হয়ে বা অসুখে মৃত্যুশয্যায় থাকলে অর্থ-সম্পদ নিকট আত্মীয়দের দান করা যায়, যাকে বলা হয় মৃত্যুচিন্তায় দান। কিন্তু দানের সময় এই নোবেলজয়ী তেমন কোনো পরিস্থিতিতে ছিলেন না বা এখনো নেই। এছাড়া ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী কিংবা ভাই-বোনকে দান করলে কোনো কর দিতে হবে না বলেও একই আইনে উল্লেখ রয়েছে। তবে ড. ইউনূস দান করেছেন ট্রাস্টে, যেসবের 'ট্রাস্টি' দাতা  নিজেই। আইনের এসব শর্ত ভঙ্গ করার কারণেই আদালতে হেরে গেছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article