আইসিজেতে মিয়ানমারের বিপক্ষে রায়

চাপ সৃষ্টি হলেও সহজ হবে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৩২, রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২, ৯ শ্রাবণ ১৪২৯

রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর চালানো গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের জন্য মিয়ানমারকে অভিযুক্ত করা হয় আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে)। এ অভিযোগের বিরুদ্ধে আবেদন করে মিয়ানমার। তবে মিয়ানমারের এ প্রাথমিক আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আইসিজে। এতে করে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হবে। তবে সহজ হবে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।

গত শুক্রবার আইসিজে মিয়ানমারের আবেদন খারিজ করে। এ রায় বিচারিক দিক থেকে মিয়ানমারকে পিছু হটালেও প্রত্যাবাসনের জন্য রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দেশটির সঙ্গে জয়ী হতে হবে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। তিনি সমকালকে বলেন, আদালত একটি সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে বিচারিক দিক থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে। তবে বাংলাদেশ সরাসরি এর সুবিধা পাবে না, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক ধাপ। কারণ এতে করে মিয়ানমারের যারা অপরাধী, তারাই শাস্তি পাবে। এর সঙ্গে সরাসরি প্রত্যাবাসনের কোনো যোগসূত্র নেই। এতে প্রত্যাবাসন সহজ হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা প্রক্রিয়া। রাজনৈতিকভাবেই এতে জয়ী হতে হবে। এ রায় প্রত্যাবাসনের নিশ্চয়তা এনে দেয়নি।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় প্রত্যাবাসন যদি শুরুও হয়, তবে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, রায়টি রোহিঙ্গাদের জন্য ইতিবাচক। এ পর্যন্ত দুটি রায়ই রোহিঙ্গাদের পক্ষে গিয়েছে। বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক। কারণ এতে করে বাংলাদেশের আলোচকদের হাত শক্ত হলো। তিনি বলেন, এ রায়ের ফলে মিয়ানমার হয়তো তারাতাড়ি প্রত্যাবাসন চাইবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সাবধান থাকতে হবে। মিয়ানমার অল্প কিছু রোহিঙ্গাকে নিয়ে আইসিজেকে বোঝানোর কৌশল নিতে পারে। বাংলাদেশ যাতে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়।

এখানে আমাদের সহায়ক পরিবেশ ও রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস তৈরির জায়গায় শক্ত থাকতে হবে। কারণ আমাদের দেশের অনেকের মাথায় রয়েছে যে, প্রত্যাবাসন শুরু হলেই হয়ে গেল। এখানে মিয়ানমারকে বিশ্বাস করা যায় না। সব সময়ে তারা কোনো না কোনো অজুহাত সামনে এনে অন্যদিকে মোড় নিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমারের মামলায় গণহত্যা সংঘটনের বিরুদ্ধে নেপিদোর করা আবেদন বাতিল করা নিয়ে আইসিজের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। এতে বলা হয়, আইনি ও পদ্ধতিগত দিক থেকে মিয়ানমারের প্রাথমিক সব আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আইসিজে। এ রায় রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে সহায়ক হবে মনে করে বাংলাদেশ। আইনসিদ্ধ অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে বলেও মনে করে বাংলাদেশ।

২০১৯ সালের নভেম্বরে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। তাতে মিয়ানমার আপত্তি তোলে, আইসিজেতে এ মামলা করার এখতিয়ার গাম্বিয়ার নেই। ১৯৪৮ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা সনদে সই করা সকল দেশেরই দায়িত্ব হলো গণহত্যা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখা। আর গাম্বিয়াও সে কাজই করেছে বলে আইসিজে জানায়। আইসিজের এ মামলা শোনার এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলে মিয়ানমার। গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সনদে সই করা কোনো দেশ যখন গণহত্যার অভিযোগ করে, তার ওপর শুনানি করার এখতিয়ার এ আদালতের রয়েছে।

চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের আবেদনের শুনানি করে আইসিজে। তার ভিত্তিতে গত শুক্রবার মিয়ানমারের আপত্তি নাকচ করে জাতিসংঘের এ আদালত। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ বা দোষীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া।

বিষয়ঃ রোহিঙ্গা

Share This Article


যু‌দ্ধের টাকা জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হ‌লে বিশ্ব রক্ষা পে‌তো: প্রধানমন্ত্রী

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছি

বাংলাদেশ সফরে আসছেন কাতারের আমির

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

‘মুজিব ব্যাটারি’ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে যাত্রীবাহী ফেরিডুবি, নিহত ৫৮

সব উপজেলায় একটি করে মিনিস্টেডিয়াম নির্মাণ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

সারাদেশে হিট অ্যালার্ট, দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিতের তাগিদ

বিএনপির বিরুদ্ধে করা মামলা রাজনৈতিক নয়: প্রধানমন্ত্রী

ভোট উৎসবে বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ

ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিলেন খালেদা জিয়া: শেখ হাসিনা