প্রথম আলো’র অসত্য সংবাদ পরিবেশন : এডিটরস গিল্ড ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির তীব্র নিন্দা
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশিত ‘শিশুর নামে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে অসত্য সংবাদ পরিবেশনে’র বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের টিভি চ্যানেল, বেতার, সংবাদপত্র ও অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সম্মিলিত সংগঠন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ ও সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফোরাম। এ ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবিও জানায় স্ব স্ব সংগঠনগুলো।
গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এবং এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু ও সাধারণ সম্পাদক ইনাম আহমেদ পৃথক স্বাক্ষরিত দু’টি বিবৃতি দেন।
এডিটরস গিল্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত প্রথম আলোর বিতর্কিত প্রতিবেদনটি মহান স্বাধীনতাকে হেয় করার শামিল। এটি সাংবাদিকতার নামে নির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের ধারাবাহিক চেষ্টার অংশ মাত্র। এ ধরনের বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ সাংবাদিকতা নয়, অপসাংবাদিকতা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে একাধিক পক্ষ থাকলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বক্তব্য না নেওয়া, অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া এবং অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ছবি তোলা কিংবা তার বক্তব্য ধারণ করা সংবাদপত্রের নীতিমালা পরিপন্থী। একজনের ছবির সঙ্গে আরেকজনের উদ্ধৃতি প্রকাশ, ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর ছবি ও বক্তব্য প্রকাশ পাঠকের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। অথচ আলোচিত সংবাদটি প্রকাশের ক্ষেত্রে এসব রীতিনীতি প্রথম আলো ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।’
উল্লিখিত প্রতিবেদনটিতে মূলত একজন শিশুর ছবির নিচে ক্যাপশনের পরিবর্তে একজন দিনমজুরের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে, যে বক্তব্যে দেশের স্বাধীনতাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাপশনে একজন দিনমজুরের বক্তব্য হিসেবে উক্ত মন্তব্য প্রকাশ করা হলেও ছবিতে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দেখা যায়নি। ওই শিশুকে তার দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে প্রলুব্ধ করে ছবিটি তোলা হয়েছে বলেও জানায় এডিটরস গিল্ড।
অন্যদিকে, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর সংবাদ যে মুহূর্তে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, সেই মুহূর্তে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানায় ঢাবি শিক্ষক সমিতি ফোরাম। সেইসঙ্গে উক্ত সংবাদপত্রসহ সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণেরর দাবি জানায় সংগঠনটি।