মুক্ত গণমাধ্যম: প্রধানমন্ত্রীও যেখানে জবাবদিহিতার আওতায়!
অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা গণমাধ্যমের সাথে যতটা না খোলামেলা কথা বলেন, প্রশ্ন নেন, তার থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি সময় দেন এবং অনেক বেশি কথা বলেন। ফলে তিনি প্রায়শই একটা জব্বদিহিতার মাঝেই থাকেন।
বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রপ্রধানরাই গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যেকোনো বিদেশ সফর শেষেই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে যেমন মন খুলে কথা বলেন তেমনই গণমাধ্যমকর্মীদের নানান প্রশ্নেরও জবাব দেন। অর্থাৎ নিজেকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে তিনি সব ব্যবস্থাই করে থাকেন। এরপরও কেউ কেউ বলেন প্রধানমন্ত্রী সেফ জোনে থেকে কথা বলেন।কিন্তু এটি একেবারেই ভুল ধারণা। সম্প্রতি ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশোতে এসব কথা বলেন দেশের অন্যতম সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানে নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘আমাদের অনেক সিনিয়র সাংবাদিক প্রশ্নের সময় অনেক বিশেষণ ব্যবহার করেন ৷ এতে প্রধানমন্ত্রী বিরক্তিও প্রকাশ করে থাকেন ৷ অনেকে বলে যে, সেখানে সব প্রশ্ন করা যায় কিনা৷ আমি অনেস্টলি বলছি যেকোনো বিষয়ে প্রশ্ন করা যায়৷''
তিনি আরও বলেন, তবে সেখানে সম্ভবত সবাই নানা কারণে সবরকম প্রশ্ন করতে চানা না৷ তাদের প্রস্তুতি থাকে না, আগ্রহ থাকে না, কারো স্বার্থ থাকে, সেল্ফ সেন্সরশিপ থাকে৷
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "ভারতের প্রধানমন্ত্রী সব প্রশ্ন নেন না। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করলে প্রেসিডেন্ট সব প্রশ্নের জবাব দেন না ৷ কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেলায় এটি একটি নিশ্চিত জায়গা যে তিনি কোন প্রশ্ন এড়িয়ে যান না।তিনি কথা বলতে চান ৷ তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে থাকেন৷ "
মাঝে মাঝে প্রত্যাশার বাইরেও নানান বিষয়ে কথা বলে থাকেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যাংক লুটসহ নানান অনিয়ম, দূর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করা হয়। এর উত্তরও তিনি দিয়ে থাকেন । তাকে এমন প্রশ্ন করা হয়েছে, আপনাকে ছাড়া কোন কিছুই হয় না কেনো? আপনাকেই কেনো জবাবদিহি করতে হবে? এর জবাবও তিনি দিয়েছেন। আর এটি আমরা সবাই জানি অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা গণমাধ্যমের সাথে যতটা না খোলামেলা কথা বলেন, প্রশ্ন নেন, তার থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি সময় দেন এবং অনেক বেশি কথা বলেন।ফলে তিনি প্রায়শই একটা জব্বদিহিতার মাঝেই থাকেন।