কূটনৈতিক মহলে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর 'চায়ের দাওয়াত'!

পশ্চিমা দেশগুলো আগামীতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। সে লক্ষ্যে বিভিন্নদেশের কূটনীতিকরা প্রায়শই রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে বিবৃতি দিচ্ছেন। তবে বিএনপি বলেছে যে, তারা ২০১৮ সালের মত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে না। এরকম পরিস্থিতিতে যখন একটি অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছে, ঠিক সেইসময় প্রধানমন্ত্রীর 'চায়ের দাওয়াত' রাজনীতিতে একটি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
রোববার ২৪ জুলাই বিরোধী দলের আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলেও তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা শুনতে চেয়েছেন এবং তাদেরকে চা খাওয়াতে চেয়েছেন।
যদিও বিএনপি বলেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা চা খেতে পারেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিতবাহী এবং এর পিছনে একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জেনে-বুঝেই চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন।
অনেকেই মনে করছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সাথে একটি সংলাপ করবেন, আলাপ-আলোচনা করবেন এবং সেই আলাপ-আলোচনা শুরুর ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে এই বক্তব্যের মাধ্যমে।
এর আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের আগেও রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু বিএনপি সেই সংলাপে যোগদান করেনি। এরপর নতুন নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে। এই সংলাপেও বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। ফলে রাজনীতিতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐক্যমতে পৌঁছানোর সংস্কৃতিটি প্রায় মুছেই যাচ্ছিলো। কিন্তু এই সমস্ত শঙ্কার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর যে 'চায়ের দাওয়াত' রাজনীতিতে নতুন চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে।তাই এটি নিয়ে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে কূটনৈতিক মহলেও।
বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বলছেন, আগামী নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক, অংশগ্রহণমূলক করতে প্রধানমন্ত্রীর আহবানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একাধিক কূটনৈতিক প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, তারা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা মনে করছেন যে, একটি সমঝোতা নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রায়ই ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয় যে, ক্ষমতাসীন দল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কর্মসূচি করার সুযোগ দেন না, বিরোধী মতকে দমন করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট বার্তা দিলেন বলেও মনে করছেন তারা।