ক্রিকেটারদের ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’ দিয়েই সফল হাথুরু

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:১৭, সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩, ১৩ চৈত্র ১৪২৯

আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলতে নামবেন টাইগাররা। শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে নিজেদের কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে শক্তির জানান দিয়েছে সাকিব-শান্তরা। সেই দিন থেকে অনেকটা ফুরফুরা মেজাজেই আছে দল।

এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে রীতিমতো রানের পাহাড়, রেকর্ড গড়েই জয় তুলে নিয়েছে। মূলত আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে অনেকটা উজ্জীবিত হয়েছে উঠেছে বাংলাদেশ দল আর এর পিছনে মূল কারিগর দ্বিতীয় দফায় টাইগার কোচ হয়ে আসা চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

এর আগে তার অধীনে টাইগাররা ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালে অনেক সাফল্য অর্জন করেছিল। তবে শেষ দিকে হুট করেই বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান তিনি। পরে জানা যায়, সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হয়েছিল।

তাই দ্বিতীয় দফায় এসে তিনি কেমন করবে তা নিয়ে ছিল সংশয়। তবে তিনি আবার ফিরে এসে এক মাসেই করে দিয়েছেন বাজিমাত। আর তার এ সাফল্যর মূল মন্ত্র তিনি বললেন ক্রিকেটারদের ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’।

গতকাল টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগে চট্টগ্রামে অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। এ অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন না টাইগার দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাই ম্যাচ পূর্ব অফিসিয়াল প্রেস মিটে কথা বললেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

এ সময় দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের মধ্যে পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’ উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘একটা কথাই বলি ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’। এটা বড় একটা শব্দ। এর পেছনে অনেক ব্যাপার আছে। যেমন ধরেন আপনি এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলেন, যাতে খেলোয়াড়রা ফলাফলের ব্যাপারে, এর প্রভাবের ব্যাপারে চিন্তা না করে নিজের সেরাটা দিতে পারল। শুধু কোচ বা নির্বাচকরা নন, এমনকি সতীর্থদের কাছ থেকেও তারা যদি চেষ্টা করার মতো উন্মুক্ত হতে পারে, এরপরও ব্যর্থ হয়, তাহলে তো ঝামেলা নেই। তারা ঐ একই খেলোয়াড়ই থাকবে, যাদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমার মনে হয় এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।’

দ্বিতীয় মেয়াদে গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে আসেন হাথুরুসিংহে। নতুন অধ্যায়ে এখন পর্যন্ত সফলই বলা চলে তাকে। ২০ ফেব্রুয়ারি কাজে যোগ দেওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও, টি-টোয়েন্টিতে তাদের বিপক্ষে গড়ে ইতিহাস। 

এছাড়া আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও দেখিয়েছে প্রত্যাশিত দাপুটে পারফরম্যান্স। এই ১ মাসে ক্রিকেটারদের দক্ষতায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন প্রধান কোচ, ‘আমার মনে হয় না কিছু বদলেছে। তারা তো একই স্কিলের একই খেলোয়াড় আছে। শুধু ড্রেসিংরুমের পরিবেশ একটু বদলেছে শুধু-আমরা যেভাবে কথা বলি, আলোচনা করি। আমি দলের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করেছি। তাদের বলেছি, তারা ভালো করুক বা ব্যর্থ হোক, তাদের মূল্য আমাদের কাছে আছে। তারা আমাদের কাছে মূল্যবান। ফলে খেলোয়াড়দের কিছুই বদলায়নি, আমি জানি না এর আগে কী হয়েছে, তবে স্কিল একই আছে।’

খেলোয়াড়দের এ পরিবর্তন অন্য কোচরাও লক্ষ্য করেছে উল্লেখ করে হাথুরু বলেন, ‘আমি মনে করি সাম্প্রতিককালে এটাই সবচেয়ে বড় বদল। অন্য কোচরাও বলেছে আমাকে-এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। আসার পর আমিও সেটিই তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারবে। মাঝেমধ্যে তাদের সেরাটাও যথেষ্ট হবে না, তখন আমরা হারবো। তাতে তো ক্ষতি নেই। এটাই খেলা।’

কোচ আরও বলেন, ‘আগ্রাসী ক্রিকেট মানে এই নয় যে আমরা গেলাম আর জোরে জোরে মারলাম। সবদিক থেকেই আগ্রাসী হয়ে ওঠা। দল নির্বাচন, ফিল্ড সাজানো, আমাদের শরীরী ভাষা, ফিল্ডিং, ব্যাটিং। কৌশলগত দিক দিয়েও আগ্রাসী হবো, ফল কী হবে, তা নিয়ে ভাবব না। নিজেদের সেরাটাই খেলতে চাই। যখনই আমরা এমন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলি, মুক্তভাবে খেলেছি-এ দল তখনই ভালো করেছে।’

Share This Article