খুলনায় দৃশ্যমান হলো রূপসা রেল সেতু

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৯:০৬, রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২, ১৯ আষাঢ় ১৪২৯

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয় ২৫ জুন। একই দিনে বসেছে রূপসা রেল সেতুর সপ্তম ও সর্বশেষ স্প্যানটি। রূপসা নদীর উপর সবগুলো স্প্যাস বসানোতে মাথা উচু করে দাড়িয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের রেল সেতু। ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি হবে দেশের দীর্ঘতম রেল সেতু। এদিকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মোংলা-খুলনা রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

 

খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। সেই সাথে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সাথে খুলনা ও মোংলা বন্দরের রেল যোগাযোগের পথ সুগম হবে। ভারতের সাথে মোংলা বন্দরের রেল যোগাযোগ স্থাপন হওয়ায় কম খরচে ভারত, নেপাল ও ভুটানে মালামাল পরিবহন করা যাবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ তিনটি ভাগে বিভক্ত। এর একটি রূপসা নদীর উপর রেলসেতু, অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং। প্রকল্পের আওতায় লুপ লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ। রূপসা নদীর উপরে যুক্ত হচ্ছে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু। এছাড়া ২১টি ছোটখাটো ব্রিজ ও ১১০টি কালভার্ট নির্মাণ এবং খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৮টি স্টেশন নির্মাণকাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরমধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর উপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করছে। বাকি কাজ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন ও রেলসেতু নির্মাণসহ সমগ্র প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ রেলসেতুটি হবে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু।

২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণের এই প্রকল্পটি অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুর পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতীয় বহুজাতিক প্রযুক্তি, প্রকৌশলী, নির্মাণ, উৎপাদন ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টার্বো (এলএন্ডটি)।

জমি অধিগ্রহণ, রেল লাইন ও রেল সেতু নির্মাণসহ সমগ্র প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরপর পাঁচবার সময় বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এরই সাথে ব্যয় বেড়ে হয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।

জানা গেছে, রূপসা রেল সেতুটি ২ দশমিক ৫ মিটার ব্যাসের এবং এর গড় গভীরতা ৭২ মিটার। রেলসেতুর ভায়াডাক্টের ৮৫৬টি পাইলের সবগুলোই বসানো হয়েছে। এর মোট পাইল বেস-গ্রাউটিং ৮৫৬টি, পাইল ক্যাপ ১৩৬টি, পিয়ার ১৩৬টি, স্প্যান ইর্যাকশান ১৩৬টি ও ব্যাক স্ল্যাব ১৩৬টির সবগুলোই সম্পন্ন হয়েছে। মূল সেতুর পাইল ৭২টি, পাইল ক্যাপ ৮টি, বিয়ারিং ৩২টি সম্পন্ন হয়েছে। ব্রিজটির উপরিভাগ তৈরি করা হয়েছে স্টিলের গার্ডার এবং আরসিসি ডেকের সমন্বয়ে। মূল সেতুর উপরিভাগে ৭টি স্প্যান বসানো হয়েছে। প্রধান সেতুর জন্য নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স স্ট্যান্ডার্ড হাই-ওয়াটার লেভেল (SHWL) থেকে ১৮ দশমিক ২৯ মিটার।

সেতুর অগ্রগতি সম্পর্কে রূপসা রেলসেতুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন ম্যানেজার সুব্রত বিডি২৫ লাইভকে বলেন, রূপসা রেল সেতুর মেয়াদ ছিল চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। ইতোমধ্যে রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ স্প্যান বসেছে গত ২৫ জুন। নদীর উপরে সাতটি স্প্যান বসানো হয়েছে। আর নদীর দুই পাশে রেল সেতুর সংযোগে ২ কিলোমিটার করে চার কিলোমিটার ব্রীজ তৈরি করা হয়েছে। ফলে এখন আর কোন কাজ বাকী নেই। শুধুমাত্র পেন্টিংয়ের কাজ চলছে। এমন টুকটাক কাজ চলতে থাকবে।

তিনি বলেন, এখন যে কোন দিন রেল সেতুর অংশের কাজ বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারবো। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে রূপসা নদীর উপর সবগুলো স্প্যান বসানো হয়ে গেছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রেল সেতু আমাদের নিকট হস্তান্তর করবে। তিনি বলেন, রূপসা
উপর দাড়ালে সম্পূর্ণ রেল সেতু দেখা যাচ্ছে।

রেল সচিব বলেন, রেলপথ নির্মাণকাজ চলছে। রেলপথ বসাতে তেমন সময় লাগবে না। ছোটখাটো কিছু ব্রীজ এবং আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ চলছে। এগুলোও শেষ পর্যায়ে। আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ হয়ে যাবে। একইসঙ্গে টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং এর কাজও সম্পন্ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। ডিসেম্বরের মধ্যে সকল কাজ সম্পন্ন হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ট্রায়েল রান করার সম্ভাবনা রয়েছে। এরআগেও দু-একবার ট্রায়েল রান করানো হবে। সবশেষে আলোচনা সাপেক্ষে রেলপথ প্রকল্পের উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তন ঘটবে আশাব্যক্ত করে রেল সচিব বলেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরের সাথে খুলনা তথা সমগ্র বাংলাদেশের রেল সংযোগ তৈরী করবে। একইসঙ্গে পদ্মা রেল সেতু চালু হলে মোংলা থেকে মালামাল খুলনা-যশোর হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে সরাসরি ঢাকায় যাবে ট্রেন। সময় ও পথ কমে আসবে। এতে মোংলা বন্দরের কর্মকান্ড আরও গতিশীল হবে। মোংলায় নতুন জেটিরও নির্মাণ কাজ চলছে। জাহাজও আসবে। সবমিলিয়ে মোংলা বন্দরের ডিমান্ড বেড়ে যাবে- ইনশাআল্লাহ। এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।

Share This Article

আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের পিটিয়ে বিএনপি বিএনপির গণতন্ত্র চর্চা!

শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনবে জনগণ: কামরুল ইসলাম

প্রথম আলো’র অসত্য সংবাদ পরিবেশন : এডিটরস গিল্ড ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির তীব্র নিন্দা

৬৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি পাকিস্তানে

শিশু নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার শামসুজ্জামান : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে গণতন্ত্র মঞ্চের

‘শহরের ভেতরে নৌপথ যোগাযোগ উপযোগী হলে সড়কে যানজট কমবে’

নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে চায় বাংলাদেশ

সোনার দাম ফের বাড়ল, ভরি লাখ ছুঁই ছুঁই

বাংলাদেশ মাছ-মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে নিজের মতো খবর সাজিয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক

রাজনীতিতে উল্টো হাওয়া, বিএনপি এখন ভারতমুখী !

শওকত মাহমুদের পথে আছেন বিএনপির আরও অনেক রাঘববোয়াল!

প্রবাসে ভিপি নুরের জমজমাট ‘পদ বাণিজ্য’ ও ফান্ড কালেকশন!

বিএনপির ভোট বর্জনের তিক্ত ইতিহাস : দ্বাদশ নির্বাচন আদৌ বর্জন করবে কি দলটি?

গুরুত্ব বেড়েছে বাংলাদেশের, নির্বাচনেও পাশে থাকতে চায় ৩ 'সুপার পাওয়ার' দেশ

ভারতের পাতানো ফাঁদে বিএনপি!

যে কোন পদক্ষেপ নিতে নির্ভীক শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসবেন চতুর্থ মেয়াদে : ব্লুমবার্গ

ভারত ইস্যুতে বিভক্ত বিএনপির নীতি নির্ধারকরা

প্রথম আলোর 'মিস ইনফরমেশন':ভুল স্বীকার যথেষ্ট কি?