আহসান হাবিবের ‘রোবট’ কাজ করবে হোটেল বয়ের

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:৩১, রবিবার, ১২ জুন, ২০২২, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

দুই বছর গবেষণা শেষে একটি রোবট বানিয়েছেন আহসান হাবিব। এটি সামনে ও পেছনে হাঁটতে পারে। এ ছাড়া বাংলা ও ইংরেজিতে কোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের অনেক মন্ত্রী-এমপির নামও বলতে পারে।

এ ছাড়া হাত দিয়ে ভারী জিনিসপত্র বহন করতে পারবে। হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করতে পারবে। আর কিছু প্রযুক্তি যোগ করলে এটি বয় হিসেবে কাজ করতে পারবে হোটেল-রেস্তোরাঁয়।

আহসান হাবিবের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভার ইউনিয়নের মানিকবাজার এলাকায়। কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক শাখার ছাত্র।

তার বাবার নাম মৃত মজু মিয়া। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে হাবিব ছোট। ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও দেখে মাথায় আসে রোবট তৈরি করার।

২০১৭ সালের দিকে তুষভার আরএমএমপি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াকালীন কাঠ দিয়ে একটি রোবট তৈরি করেন হাবিব। ওই সময় জেলা বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মেলায় রোবটটি নিয়ে অংশ নিলে তিনি প্রথম হন। এরপর তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়।

২০১৮ সালে হাবিবের বাবা মারা যান। এরপর তার পরিবার আর্থিক সংকটে পড়ে। হাবিব ও তার বড় ভাই খাইরুল ইসলামের ওপর আসে সংসারের দায়িত্ব। কিন্তু ছোট ভাইয়ের ইচ্ছা পূরণ করতে কোনো কাজ করতে দেন না বড় ভাই। বাড়িতে বসে টিউশনি শুরু করেন হাবিব। যে টাকা আসত, তা দিয়ে বিভিন্ন সময় সার্কিটসহ রোবট তৈরির জিনিসপত্র কিনতেন।

তরুণ গবেষক আহসান হাবিব বলেন, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করতেই আমার এই ক্ষুদ্র চেষ্টা। আমার এ কাজে সাহস জুগিয়েছেন আমার মা ও বড় ভাই। রোবটটি রেস্টুরেন্টে কাজ করার উপযোগী করে বানিয়েছি। যদিও এখনো আমি রোবটটির পুরোপুরি কাজ শেষ করতে পারিনি। অর্থ সংকটের কারণে কাজ এখন বন্ধ রেখেছি। টাকার সংস্থান হলে আগামী তিন মাসের মধ্যে রোবটটি উন্মুক্ত করতে পারব। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদসহ দেশবাসীর কাছে আমি সহযোগিতা চাই।

আহসান হাবিবের মা খালেদা বেগম বলেন, হাবিবের বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের ভার তাদের দুই ভাইয়ের ওপর পড়ে। এরপরও সারা দিনের ক্লান্তি শেষে তার চিন্তাভাবনা তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে। সেই পরিশ্রমের পর আজ সে রোবট তৈরি করেছে। গ্রামের মানুষ তাকে নিয়ে এখন গর্ব করছে। বিষয়টি আমার খুব ভালো লেগেছে।

কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক কলেজের শিক্ষক ইমান আলী জানান, হাবিব ছোটবেলা থেকেই অনেক মেধাবী। সব ধরনের পরীক্ষায় প্রথম হতো। কিন্তু অভাবের কারণে দেশের ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে পারেনি। সেটা পারলে হয়তো দেশের নাম উজ্জ্বল করত। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কমনা করেন তিনি।

Share This Article