মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল ও রিজার্ভ চাঙ্গা করতে ঋণ চায় সরকার

করোনা মহামারি অভিঘাতের পর বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দুই দেশ ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধের কারণে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। ডলারের বিপরীতে দেশে দেশে কমছে নিজস্ব মুদ্রার মান। দেখা দিয়েছে ডলার সংকট। বাংলাদেশেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এর বিপরীতে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়েনি। সব মিলিয়ে লেনদেনের ভারসাম্যে ব্যাপক নেতিবাচক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা ও রিজার্ভের মজুত চাঙ্গা করতে এবং বাজেট ঘাটতি মেটাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছে ঋণে আবেদন করছে সরকার। ছোট-বড় মিলিয়ে যা ৭৭৫ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশের আর্থিক সংকট চলছে। এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করা উচিত। এর ফলে আগামীতে বৈদেশিক মুদ্রার যে বাড়তি চাহিদা তৈরি হবে সেটির জোগান দেয়া সহজ হবে। ফলে বৈশ্বিক সংস্থাগুলো থেকে ঋণ নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। এতে ডলারের দর ও রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সহায়তা করবে। কেন না এই ঋণের পুরো অর্থ মিলবে ডলারে।
অন্যদিকে, দাতা সংস্থা থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে এসব ঋণ গ্রহণেও কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে না। তাদের দেয়া শর্ত বাংলাদেশকে নতুন করে কোনো সমস্যায় ফেলবে না বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই আইএমএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার কাছে তিন বছরের জন্য ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
আইএমএফ ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ১০০ কোটি ডলার, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কাছে ৭৫ কোটি ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ১০০ কোটি ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) কাছে ৪০ কোটি ডলার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে থেকে ৯.৯ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৭৭৪.৯ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছে সরকার।