নারায়ণগঞ্জে ডিপিডিসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

চোরাই বিদ্যুতে চলছে ফুটপাতের দোকান

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৪৬, বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০২২, ১৩ শ্রাবণ ১৪২৯

নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে বসানো দোকান রোশনাই চোরাই বিদ্যুতে। জানা গেছে, অবৈধভাবে নেওয়া বিদ্যুতে জ্বলে শত শত বাতি। একটি বাতি বাবদ প্রতিদিন গড়ে ২৫ টাকা আদায় করা হয় সে হিসাবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী একটি চক্র।

 

এই চক্রে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। অন্যদিকে সরাসরি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহার করায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সারা দেশের ন্যায় সরকারিভাবে নারায়ণগঞ্জে দোকানপাট ও মার্কেট রাত ৮টার পর বন্ধ রাখাসহ একাধিক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী বড় বড় বিপণিবিতান নির্ধারিত সময় পরে বন্ধ হলেও খুঁটি থেকে অবৈধ বিদ্যুত সংযোগ নিয়ে অবাধে ব্যবসা চালিয়ে আসছে ফুটপাতের দোকানিরা। ফলে বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সব নির্দেশনা পালনে নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের নাকের ডগায় চলছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসব।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে কয়েক শতাধিক দোকান। গভীর রাত পর্যন্ত দোকানগুলোর আলোতে ঝলমলে থাকে পুরো এলাকা। তবে এখানকার বেশির ভাগ বিদ্যুৎ সংযোগই অবৈধ। একই দৃশ্য শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাতেও। শায়েস্তাখান সড়ক, নবাব সিরাজউদ্দৌল্লাহ সড়ক ও নবাব সলিমুল্লাহ সড়কে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের ঘটনা বেশি। বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন এক বাতি বাবদ তারা দিয়ে থাকেন ২০ থেকে ৩০ টাকা। কিন্তু এই টাকা বিদ্যুৎ বিভাগে জমা হয় না। টাকা হাতিয়ে নেয় শহরের প্রভাবশালী মহল। এক দোকানি বলেন, ‘এক বাতির জন্য তিনি প্রতিদিন ২০ টাকা দেন এক ব্যক্তিকে। শায়েস্তাখান রোডের অন্য এক দোকানি বলেন, ‘আমরা লাইন চালাই। বিদ্যুৎ বিল ২৫ টাকা নিয়ে যায়। বিল দেয় কি না জানি না। ’

আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি নূর উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, সারা দেশে বিদ্যুতের সংকট চলছে। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ফুটপাতের দোকানে অবৈধ সংযোগগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অবৈধ সংযোগ দিয়ে একদিকে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।


নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসির (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) নির্বাহী প্রকৌশলী (পূর্ব) গোলাম মর্তুজা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা প্রতি মাসেই নিয়মিত অভিযান চালিয়ে থাকি। অভিযানে অবৈধ সংযোগ পেলে জরিমানা করে সংযোগ কেটে দেই।’

নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসির (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামাল হোসেন অবৈধ সংযোগের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা মাসখানেক আগেও ফুটপাতে অভিযান চালিয়েছি। বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ নেওয়া হকারদের জরিমানা করেছি। তাদের মধ্যে অনেকে বৈধভাবে মিটার নিতে চায় কিন্তু সিটি করপোরেশনের ব্যাবসায়িক কোনো লাইসেন্স নেই। ফলে তাদের আমরা বৈদ্যুতিক মিটার দিতে পারি না। তবে শিগগিরই অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

Share This Article