যে তিন কারণে বরিশালের ভোটের মাঠে খোকন সেরনিয়াবাতকে এগিয়ে রাখছেন বিশ্লেষকরা
![যে তিন কারণে বরিশালের ভোটের মাঠে খোকন সেরনিয়াবাতকে এগিয়ে রাখছেন বিশ্লেষকরা](/Uploads/Images/News/2023/5/Image-13015-20230524174756.webp)
আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) নির্বাচন। এরই মধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন স্ব স্ব দলের মেয়র প্রার্থীরা। তবে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতকে বিশেষ তিনটি কারণে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন।
জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে অংশ নিতে যাচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। অন্যদিকে এ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় ব্যানারে না গেলেও স্বতন্ত্র ব্যানারে মেয়র প্রার্থী হয়ে অংশ নিচ্ছেন কামরুল আহসান রূপন। তবে এদের সবাইকে ছাপিয়ে কেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত এগিয়ে রয়েছেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
প্ৰথমত; নির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা। আর বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রথমেই আওয়ামী লীগ সেই শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন মনক্ষুণ্ন নেতাকর্মীরা। এ তালিকায় রয়েছেন সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহও। এবারের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। কিন্তু মনোনয়ন না পওয়ায় প্রথমে মনোক্ষুন্ন হলেও পরক্ষণেই শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। একই সাথে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি থেকে দূরে থাকা প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরনের স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজও খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়েছেন। আর এসব কিছুই জানান দিচ্ছে আওয়ামী লীগ কতোটা ঐক্যবদ্ধ।
দ্বিতীয়ত, আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি’র ভোটাররা কাকে ভোট দিবেন এ নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়েছেন। দলীয়ভাবে যেহেতু ঘোষণা হচ্ছে না, সেহেতু ভোটাররা কি বার্তা পাচ্ছে কিংবা প্রার্থী নির্বাচনে তারা কাকে সমর্থন করবে সেটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এমন বিভ্রান্তিতে বিএনপির অধিকাংশ ভোটার বিভক্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।একদিকে বিএনপি ও সমমনা প্রার্থী রূপন ও অন্যদিকে নৌকা ঠেকাতে হাটপাখায় সমর্থনের কথাও চাউর রয়েছে ভোটের মাঠে।কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভোট দ্বিধা-দ্বন্দ ছাড়াই এক বাক্সে পড়বে। ফলে আওয়ামীলীগ প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত অনেকাংশেই এগিয়ে থাকবেন।
তৃতীয়, বরিশাল নগরীতে বিএনপির বাইরে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ‘র মেয়র প্রার্থী চরমোনাই পীর ফয়জুল করিমের ‘হাত পাখা’কে। যদিও টাকা দিয়ে ভোট কেনা, ধর্মের অপব্যবহার করে নির্বাচনে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে এরই মধ্যে ‘হাত পাখা’ নিয়ে নগরজুড়ে সমালোচনা চলছে। একটি সুন্দর নগর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যে রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক জ্ঞান প্রয়োজন সেটি ফয়জুল করিমের নেই বললেই চলে। এমন নেতার পক্ষে প্রকৃত নগর উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটার বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটাররা।আর এবারের নির্বাচনে নতুন ভোটাররাই 'কিং মেকার'।কিন্তু নতুন প্রজন্মের কাছে চরমোনাই পীরের দলের গ্রহণযোগ্যতা নেই বললেই চলে। বিপরীতে নতুন প্রজন্মের কাছে খোকন সেরনিয়াবাত ক্লিন ইমেজের একজন ব্যক্তি। অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে ইতিমধ্যে কথার মাধ্যমে সকলের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি।ফলে ভোটের মাঠে সব মিলিয়ে খোকন সেরনিয়াবাতকেই এগিয়ে রাখছেন বিশ্লেষকরা।