রোহিঙ্গা ক্যাম্পেই তৈরি হচ্ছিল জাল এনআইডি-জন্মসনদ, আটক ৫

২০ জুলাই উখিয়া লাম্বাশিয়া ক্যাম্পের মো. আবদুল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গার বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। 

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এপিবিএন-৮ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসেন।

আটকরা হলেন, কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্প-১ এর মো. ইসলামের ছেলে মো. আবদুল্লাহ (৩৭), মুসা খলিলের ছেলে আবুল খায়ের (১৮), হাবিবের ছেলে মো. তালহা (৬০), তার সহোদর মো. হারুন (৩৬) ও টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ উত্তর পাড়া এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে মো. ইসমাইল (৪৫)।

আটকরা জালিয়াতি চক্রের সদস্য উল্লেখ করে কামরান হোসেন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে একটি জালিয়াতি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নকল জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা আব্দুল্লাহর বসত ঘরে অভিযান চালায় এপিবিএন। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত চারটি ল্যাপটপ, আটটি স্মার্টফোন, চারটি পেনড্রাইভ, একটি স্ক্যানার, একটি প্রিন্টার, ১১টি জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই, ৩০টি নকল জন্মসনদ, ২০টি নকল এনআইডি, ২০০ বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডির ফটোকপি, সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের চেক বই ও জমা দান বই, পাঁচটি সিল, একটি সমবায় সমিতির নিবন্ধন সনদপত্র, ২০টি শাহপুরী বাস্তহারা আদর্শ গ্রাম সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য ফরম, ৩৫টি টাকা জমা দেয়ার পাস বই উদ্ধার করা হয়।

এগুলোর পাশাপাশি মো. আব্দুল্লাহর নামে আটটি ৪নং রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয়তা সনদসহ আরও বিভিন্ন নামের চারটি জাতীয়তা সনদ, রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিহীন সনদ পাঁচটি, ইলেক্ট্রিক বিলের কাগজ, বিভিন্ন ধরনের জায়গা জমির দলিল ও খতিয়ানসহ মো. ইসমাইলের জন্মসনদ ও আইডি কার্ড, তালহার সিটি করপোরেশনের সনদ, জন্মসনদ, এনআইডি (নকল) ও হারুনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি উদ্ধার করা হয়।

এপিবিএন-৮ এর কমান্ডিং অফিসার শিহাব কায়সার খান বলেন, সাধারণ রোহিঙ্গারা মূলত বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ এবং বিদেশ গমনের জন্য পাসপোর্ট তৈরির লক্ষ্যে উক্ত দালাল চক্রের দ্বারস্থ হয়। এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে নকল বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও পাসপোর্ট তৈরি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও চক্রের বাকি সদস্যদের নাম স্বীকার করেছে। তাদেরকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আইনি প্রক্রিয়া শেষে জব্দকৃত মালামালসহ আটক ব্যক্তিদের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, এনআইডি ও জন্মসনদসহ বাংলাদেশি স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ তৈরির বেশকিছু সরঞ্জামসহ আসামিদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামালা করা হয়েছে।