৪২ ইঞ্চি উচ্চতার বর-কনে দুশ্চিন্তার অবসান বিয়েতে

আল আমিনের বয়স ৩২, উচ্চতা মাত্র ৪২ ইঞ্চি। বিয়ের জন্য তার কনে মিলবে কিনা তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একধরনের দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাবা-মা। অন্যদিকে আসমা খাতুনের উচ্চতাও মাত্র ৪২ ইঞ্চি। তার বিয়ে নিয়েও চিন্তায় ছিলেন বাবা-মা। তবে দীর্ঘ চেষ্টার পরে অবশেষে এই দুজনের বিয়ে হওয়ায় খুশি উভয় পরিবার। গত ৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার ইবি থানার করিমপুর গ্রামে কনে আসমা খাতুনের বাড়িতে ধুমধাম করে তাদের বিয়ে হয়।
আল আমিন শৈলকুপা উপজেলার চর-বাখরবা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে। আসমা খাতুন কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার করিমপুর গ্রামের আকমল জোয়াদ্দারের মেয়ে।
বিয়ের পর নববধূ আসমা এসেছেন বরের বাড়ি চর-বাখরবা গ্রামে। বিয়ের পরদিন শনিবার বর-বউ আনা-নেওয়াসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা চলে। এই নবদম্পতিকে দেখতে সকাল থেকেই বরের বাড়িতে ভিড় করছে মানুষ। অনেকে উপহার দিচ্ছেন তাদের। বর আল আমিন জানান, তিনি মেয়ে দেখে পছন্দ করেন। এরপর দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়।
কনে আসমা খাতুন বলেন, বিয়েতে আমি খুশি। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে আসার পর সবাই আমাকে সম্মানের চোখে দেখছে।
আল আমিনের বাবা আবদুল খালেক কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার ৫ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে আল-আমিন সবার ছোট। তিনি জানান, অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছোট ছেলেকে বিয়ের জন্য অনেক চেষ্টা করছি। এত দিন মেলেনি। এখন মিলেছে। আমি ভীষণ খুশি, বাজারের অনেক মানুষের দোয়া নিয়েছি।’
আসমা খাতুনের বড় বোন শিউলী খাতুন জানান, তাদের বাবাও কৃষক। তারা চার বোন ও এক ভাই। তিনি বলেন, ‘এই বোনকে বিয়ের জন্য পরিবারে একটা টেনশন ছিল, শেষ পর্যন্ত বোনকে বিয়ে দিতে পেরে পরিবারের সবাই খুশি হয়েছে’। শিউলি আরও বলেন ‘বোনকে তার স্বামীর পরিবারের সবাই হাসিমুখে মেনে নিয়েছে, আনন্দ উৎসব করেই ওদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।’
আল-আমিনের মেঝভাবি রিনা খাতুন বলেন, আমরা সবাই খুশি। দোয়া করি যেন আলআমিন-আসমার সংসার সুখের হয়। আল-আমিনের ফুপু স্বর্ণা খাতুন বলেন, আল্লাহ জোড়া মিলিয়ে দিয়েছে, বউমা পেয়ে আমরা খুশি।
খর্বাকায় এই দম্পতির বিয়ের ঘটক ছিলেন শৈলকুপার রিপন মিয়া। তিনি বলেন, উভয় পরিবার তাদের সম্পর্কে আত্মীয় হয়। এর মাঝে খবর পান আসমার বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছে। এই খবর পেয়ে তিনি ছেলের বাবার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর উভয় পরিবার দেখাশোনার মাধ্যমে শুক্রবার বিয়ে সম্পন্ন হয়। এমন বিয়ে দিতে পেরে আমি আনন্দিত এবং খুশি। বিয়ের দেনমোহর করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।