২০২৬-২৭ অর্থবছরে দেশের রিজার্ভ ছাড়াবে ৫০ বিলিয়ন ডলার !

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:৪৪, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১৩ ফাল্গুন ১৪২৯

করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ কাটিয়ে বাংলাদেশ যখন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছিলো ঠিক তখনই শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। যার কঠিন প্রভাব পড়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অর্থনীতির উপর। ফলে অস্থির হয়ে ওঠে জ্বালানী তেলের বাজার। মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্য-পণ্য ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।

অন্যদিকে, আশানুরুপ প্রবাসী আয় না আসায় টান পড়ে রিজার্ভেও। তবে আশার কথা হচ্ছে, এ সংকট কাটতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্যান্য দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সংস্থা –আইএমএফ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অসাধারণ কিছু পদক্ষেপে পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে প্রবাসী আয়। এর উপর ভর করেই ২০২৬-২৭ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো দেশের রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

প্রতিবেশি দেশের সাথে তুলনা করে আইএমএফ আরও জানায়, ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে গত ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন ঘটেছে। দেশটির রিজার্ভ ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৬৬ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। অন্যদিকে তীব্র আর্থিক সংকটে থাকা পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৭ কোটি ডলার কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৯০ কোটি ডলার।

ব্যতীক্রম বাংলাদেশ :

আইএমএফের মতে, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। হুন্ডি ঠেকাতে কাজে লাগানো হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। এর কল্যাণে বেড়েছে রেমিট্যান্স।  

এছাড়া, রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকারি ভাবে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজীকরণ পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা ইত্যাদি। আর সঠিক সময়ে এসব পদক্ষেপগুলোর কারনেই রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ বাড়ছে বলে জানায় আইএমএফ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। ১৫ ফেব্রুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ আরও বেড়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ২৪ দিনে ১৩৩ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৪ হাজার ২৩১ কোটি টাকার কিছু বেশি। সে হিসাবে চলতি মাসে গড়ে প্রতিদিন আসছে ৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার বা প্রায় ৫৯৩ কোটি টাকা। সামনে রোজা ও ঈদ। এর ফলে আগামী কয়েক মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে। এতে রিজার্ভ আরও স্বস্তিদায়ক অবস্থানে ফিরবে বলে আশাবাদী কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article