২৫ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে মামলা ধামাচাপা দিলো গ্রামীন টেলিকম
![২৫ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে মামলা ধামাচাপা দিলো গ্রামীন টেলিকম](/Uploads/Images/News/2022/7/Image-859-20220706152640.jpeg)
যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করতে ড. ইউনুস একসময় কলকাঠি নেড়েছিলেন, এবার খোদ তার এবং তার গ্রামীন টেলিকমের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে গ্রামীন টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের প্রাপ্য ৫ শতাংশ লভ্যাংশের দাবীতে গ্রামীন টেলিকমের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করেছিলেন। সেই মামলা প্রত্যাহারের জন্য গ্রামীন টেলিকম ও গ্রামীন টেলিকম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের মধ্যে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
কিন্তু এই সমঝোতার জন্য গ্রামীন টেলিকম একটি অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেছিলো। সমঝোতা করার জন্য তারা শ্রমিক কর্মচারীদের আইনজীবী ও ইউনিয়ন নেতাদের ঘুষ দিয়েছিলেন।
বিষয়টি আদালতের নজরে এলে, গত ৩০ জুন বিচারপতি খুরশিদ আলম সরকার গ্রামীন টেলিকম বনাম গ্রামীন কর্মচারী ইউনিয়নের মধ্যকার মামলাটি রি-কল করেন।
শুনানীতে বিচারক বলেন, মামলাটির সমঝোতা হয়েছিলো। কিন্তু এই মামলায় ২৫ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে প্রমাণ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই মামলার আইনজীবী ও গ্রামীন কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের একাউন্টে এই টাকার লেনদেন হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দুই পক্ষের সমঝোতা অনুযায়ী চলতি বছর ১০ মে গ্রামীন টেলিকম 'ঢাকা ব্যাংকে'র গুলশান শাখায় একটি একাউন্ট খোলে। এরপর 'ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে'র মিরপুর শাখার গ্রামীন টেলিকমের একটি একাউন্ট থেকে 'ঢাকা ব্যাংকে'র গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা জমা করা হয়।
এই লেনদেনের পরেই শ্রমিক কর্মচারীরা গ্রামীন টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। নতুন একাউন্ট থেকে ১৬৪ জন কর্মচারীকে ৩৬৪ কোটি ৬২ লাখ ৬১ হাজার ২৮২ টাকা প্রদান করা হয়।
ওই একই একাউন্ট অর্থাৎ
'ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে' মিরপুর শাখা থেকে 'ডাচ বাংলা ব্যাংকে'র মিরপুর শাখায় গ্রামীন টেলিকম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের একাউন্টে ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬৭৮০ টাকা জমা করা হয়।
শ্রমিকদের একাউন্টে জমাকৃত এই টাকা থেকে মে মাসের ১৯, ২৬ ও ২৯ তারিখ এবং জুন মাসের ২ তারিখে মোট ১৩ টি চেকের মাধ্যমে ১০ টি একাউন্টে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ট্রান্সফার করা হয়।
যাদের মধ্যে ঘূষের টাকা ভাগ বাটোয়ারা হয়েছে :
* গ্রামীন টেলিকম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের আইনজীবী মোঃ ইউসুফ আলী যিনি সিংড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, তার নামে ৯ কোটি টাকা।
* আইনজীবী মোঃ ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসানের নামে যৌথ একটি একাউন্টে ৬ কোটি টাকা।
* ইউসুফ আলীর আইনি প্রতিষ্ঠান এটর্নীজ এর নামে ১ কোটি টাকা।
* গ্রামীন টেলিকম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামানের একাউন্টে ৩ কোটি টাকা।
* ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসানের একাউন্টে ৩ কোটি টাকা।
* ইউনিয়নের প্রতিনিধি মাইনুল ইসলামের একাউন্টে ৩ কোটি টাকা।
* এছাড়া নগদ উত্তোলন করা হয়েছে আরও ৫০ লাখ টাকা।
জানা যায়, গ্রামীন ফোন থেকে আসা হাজার কোটি টাকা কোন অলাভজনক খাতে কত ব্যয় হবে সেই সিদ্ধান্ত নেন ড. ইউনুস। আদালতে তাদের জমা দেয়া নথি ঘেটেও দেখা যায় তাদের নিয়োগ করা লবিয়িস্ট ফার্মই বলছে ঘুষ দিতে সেই টাকা ব্যয় করেছে ড. ইউনূসের গ্রামিন টেলিকমই।অর্থাৎ ঘুষ প্রদত্ত হয়েছে ড.ইউনূসের সিদ্ধান্তেই।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন মহলকে প্রভাবিত করার জন্য ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে লবিয়িস্ট নিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রশ্ন হচ্ছে, ড. ইউনুস ও তার প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতিপক্ষের আইনজীবীকে ঘুষ দেয়ার প্রয়োজন পড়লো কেন? উত্তরটি হচ্ছে, এই মামলাটি চলমান থাকলে আরও বড় কোন কেলেঙ্কারির উন্মোচন হতে পারে বলেই মামলাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন ড. ইউনুস।