লোডশেডিং: বিএনপি আমল ও বর্তমান পরিস্থিতি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০১:৩৬, বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২, ২২ আষাঢ় ১৪২৯

হঠাৎ করেই রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের এতো ঘাটতি কেন দেখা দিলো? বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো কি চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। লোডশেডিং নিয়ে সরকারের সমালোচনা চলছে সরকার বিরোধী শিবিরেও।  

 

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তিনিটি প্রয়োজনীয় উপাদান হচ্ছে পাওয়ার প্ল্যান্ট, সঞ্চালন লাইন ও জ্বালানি। এই তিনটি জিনিস ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় না। আর ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে তিনটি খাতেই চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল তৎকালিন সরকার।

পরিসংখ্যন বলছে, ওই ৫ বছরে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল সেই তুলনায় প্রায় শূন্য শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিল তৎকালিন সরকার।  বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যর্থতার কারণেই দিনের অধিকাংশ সময়ে লোডশেডিং হতো।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে গত ১৪ বছরে পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করেছে, সঞ্চালন লাইন স্থাপন করেছে ও জ্বালানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিয়ে দেশে ৫ গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করেছে। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল তার থেকে অনেক বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে দেশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিএনপি- জামায়াত সরকার দেশের ৪৭ শতাংশ মানুষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৩/১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিতে পারেনি সেসময়। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ সরকার ১০০ শতাংশ মানুষকে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিতে পেরেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০০১- ২০০৬ সালে বিশ্বে জ্বালানির কোনও সংকট ছিল না, সংকট ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যথেষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের এবং বাস্তবধর্মী জ্বালানি নীতির। আর ছিল বিদ্যুৎ খাতে চরম দুর্নীতি। যে কারণে বিএনপি- জামায়াত জোট সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় শূন্য শতাংশ।

শেখ হাসিনার নের্তৃতাধীন আওয়ামী লীগ সরকার কিছুদিন আগ পর্যন্তও দেশের শতভাগ মানুষকে লোডশেডিং মুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়েছে। তবে বর্তমানে বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট বাংলাদেশের ওপর প্রভাব ফেলেছে যার কারণে আচমকা লোডশেডিং বেড়ে গেছে।

জানা গেছে,বর্তমানে  লোডশেডিং বাংলাদেশের একক কোনো সমস্যা না। বিশ্বের শক্তিশালী দেশেও হঠাৎ করে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালসহ অনেক দেশেই তীব্র জ্বালানির সংকট দেখা দেয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে বহুগুণ।

অস্ট্রেলিয়া গত বছর বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ভারত প্রথম বারের মতো কয়লা আমদানি করছে। পাকিস্তানে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। শ্রীলংকার অবস্থা আরো শোচনীয়। দেশটিতে পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে এশিয়ায় জ্বালানি সংকট তীব্র হয়েছে। বিগত দুই বছরে করোনার কারণে কল কারখানা অফিস আদালত বন্ধ ছিল। বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় উৎপাদনও কমে গিয়েছিল। আর রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট জ্বালানি ঘাটতিকে চরম আকার দিয়েছে।

ইউরোপের দেশগুলো পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস পাচ্ছে না। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে আগের মতো তেল এবং গ্যাস কিনতে পারছে না। বিপুল জ্বালানি চাহিদা মেটাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে এলএনজি কিনে মজুদ করা শুরু হয়েছে।

এর ফলে এশিয়ার বাজারে বেড়েছে এলএনজির দাম। দাম বাড়ায় বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশে এলএনজি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। চীনের এলএনজি আমদানি ২২ ভাগ কমে গেছে। ভারতে কমেছে ১৪ ভাগ।

রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। ক্রড ওয়েল রফতানিতে রাশিয়ার অবস্থান তৃতীয়। রাশিয়ান মুদ্রা রুবলে আমদানি করার নিয়ম অনেক দেশকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। ডলার কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থায় রুবলের আধিপত্য চোখে পড়ছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাস। বিগত বছরের তুলনায় এই দুটি দাম বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, কয়লার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ শতাংশের বেশি আর গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশের।

বিশ্লেষকরা বলছেন,  বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট বাংলাদেশের ঘাড়েও এসে পড়েছে। এটা সরকারের উপর চাপিয়ে লাভ নেই।এখানে সরকারের হাত নেই। এই সমস্যাকে বিএনপি আমলের সমস্যার সঙ্গে তুলনা করার সুযোগ নেই।

Share This Article


বিএনপির আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা ছিলো না বলেই সরকার পতন হয়নি: শিবির সভাপতি

পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূসের চালাকিতে ইউনেস্কোর বিস্ময়!

মুজিবনগর সরকারের দক্ষতায় ৯ মাসে হানাদার মুক্ত হয় বাংলাদেশ

সামরিক শাসকের অধীনে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া ইউনূসের মুখে গণতন্ত্র!

ফের বিএনপি জামায়াত সম্পর্ক: উদ্বিগ্ন বিদেশি কূটনীতিকরা

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে বাড়বে গোপন তৎপরতা, মত শিক্ষাবিদদের

প্রসঙ্গ বুয়েট: ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রচেষ্টা দেশের জন্য স্থায়ী অকল্যাণ বয়ে আনবে

বেগম জিয়ার ঘনঘন ‘ফিরোজা টু এভার কেয়ার’ রহস্য উন্মোচন!

যে কারণে অপসারণের আগেই গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়তে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস

মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন নয়, 'মাইনাস টু ফর্মুলা’র জনক ছিলেন ইউনূস!

ড. ইউনূসের পক্ষে আইনকানুন ও যুক্তির ব্যবহার নেই, আছে আবেগের বাড়াবাড়ি

আর রাখঢাক নয়: ফের প্ৰকাশ্য হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত সম্পর্ক!