সিলেটে বন্যা: যেসব সহায়তা দিচ্ছে সরকার

দেশের সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নদনদী ও হাওড়ের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার আরও বিস্তৃতি ঘটেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ।
এর পাশাপাশি রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারীসহ দেশের আরও অন্তত ১৭টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
জানা যায়, এবারের আকস্মিক বন্যার পেছনে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে অতিবৃষ্টিকে দায়ী করা হয়েছে। কারণ দেশটির চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত থেকেই মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি এলাকার শুরু। ফলে সেখানকার পানি সরাসরি বাংলাদেশের হাওড়ে এসে মেশে। পরে ভৈরব বা মেঘনা নদী হয়ে সাগরে চলে যায়।
তবে হাওড়ে অপরিকল্পিত বাঁধের কারণে এবার সেই পানি প্রবাহিত হতে না পেরে বন্যার রূপ নেয়। এ জন্য নদীর নাব্যতা সংকটকেও দায়ী করছেন নদী গবেষকরা।
বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় গৃহীত প্রদক্ষেপ সমূহ :
সিলেটে বন্যা দুর্গত এলাকায় পানিবন্দি লোকজনকে উদ্ধারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ সকল স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে বানবাসীদের সাহায্য সহযোগিতা শুরু করেছে।
এছাড়া, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো সমন্বয় করে কাজ করছে।
ইতোমধ্যে বন্যার পানি অপসারণে প্রয়োজনে রাস্তা বা বাঁধ কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৪০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম বন্যাকবলিত জেলা-উপজেলাগুলোতে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা শুরু করেছে।
অন্যদিকে, বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে মানুষকে রক্ষা করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসতে খোলা হয়েছে ৬০০টি আশ্রয় কেন্দ্র। সরবরাহ করা হচ্ছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ।
সিলেট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা জানিয়েছে, বন্যা দুর্গতদের জন্য ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭ হাজার ৯০০ বস্তা শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও ৮ হাজার প্যাকেট খাবার ও ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এবং বরাদ্দ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে।
এছাড়া, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য টোল ফ্রি নম্বর চালু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এসব টোল ফ্রি নম্বরে যোগাযোগ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নিতে পারবেন।
টোল ফ্রি নম্বরগুলো হচ্ছে 01769177266, 01769177267, 01769177268, 01852788000, 01852798800, 01852804477, 01987781144, 01993781144, 01995781144, 01513918096, 01513918097, 01513918098