এরশাদ-খালেদা জিয়া সরকারের প্রশ্রয়েই বেপরোয়া হবার সুযোগ পান ইউনূস!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:১৭, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। হারিয়েছেন ভিটেমাটিও।’ কিন্তু সবকিছু জেনেও তার সরকার কেন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এর সদুত্তর মেলেনি।

কেউ ডাকেন ‘গরিবের বন্ধু’, কেউবা নোবেলজয়ী, আছে ক্ষুদ্রঋণের জনক তকমাও। এমন বহু মুখোশের অন্তরালেই লুকায়িত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসল চেহারা, যিনি গরিবের ‘রক্তচুষে’ বানিয়েছেন সম্পদের পাহাড়। এমনকি বিচারের মুখোমুখি হওয়ার পর এখন আইনকেও দেখাচ্ছেন বৃদ্ধাঙ্গুলি। কিন্তু কোন ক্ষমতাবলে এই অধ্যাপক এত কিছু করছেন? বা কার প্রশ্রয়েই বেপরোয়া হয়েছেন; এসব প্রশ্ন এলেই সামনে আসবে খালেদা জিয়া আর এরশাদ সরকারের আমলের কথা।

গ্রামীণ ব্যাংকের ভিত্তি রচিত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে; যার সুতিকাগার চট্টগ্রামের জোবরা গ্রাম। এখান থেকেই ক্ষুদ্রঋণের কার্যক্রম শুরু করেন অধ্যাপক ইউনূস। তবে যাত্রাটা তেমন ভালো না হলেও জিয়াউর রহমানের শাসনামল আসতেই যেন ভাগ্য খুলে যায় তার। জোর তদবির চালিয়ে তৎকালীন এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। তখন জেনারেল জিয়ার কথায় ইউনূসের প্রতিষ্ঠানকে ধাপে ধাপে ৩৩ কোটি টাকা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ম ভেঙে তাকে অফিসও দেয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে।

এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি এই অর্থনীতিবিদকে। গ্রামীণ ব্যাংকের নাম ভেঙে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকেই বাগিয়ে আনতে থাকেন কোটি কোটি টাকা; যার কোনো সুষ্ঠু মনিটরিং করেনি তৎকালীন সরকারগুলো। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে তথা ১৯৮৩ সালে পূর্ণাঙ্গ ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি পায় তার প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে অর্ডিন্যান্সের বলে ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বানিয়ে দেন এরশাদ। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকল্প হওয়ায় পদাধিকার বলে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ছিলেন অর্থসচিব।

এছাড়া খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে ৩০০ কোটি টাকা পেয়েছিল গ্রামীণ ব্যাংক। কিন্তু রাষ্ট্রের কোনো অর্থই ফেরত দেননি ইউনূস। উল্টো নিজের প্রয়োজনে সবকিছু করতে থাকেন তিনি। একই সঙ্গে গ্রামীণ নাম ব্যবহার করে খুলে বসেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ইউনূসের এমন সব কৌশলী অবস্থান নিয়ে নিজের আত্মজীবনীতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান। তিনি লিখেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। হারিয়েছেন ভিটেমাটিও।’ কিন্তু সবকিছু জেনেও তার সরকার কেন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এর সদুত্তর দেননি তৎকালীন এই অর্থমন্ত্রী।

তথ্য বলছে, ১৯৯০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ছিল ৭ দশমিক ২ কোটি টাকা। পরবর্তী বছরে এর ঊর্ধ্বসীমা ১৫ কোটি টাকায় স্থির করা হয়; যা অর্জিত হয় ১৯৯৩ সালে। ৯৪-তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেকটি পত্রে মূলধনের সীমা স্থির করা হয় ৪০ কোটি টাকা। আর ২০০৮ সালে তা বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোনো আইন না মেনেই ইউনূসকে এত টাকা দিয়েছিল বিএনপি সরকার। কিন্তু জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেনি তারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূসের বড় বড় সব দুর্নীতি হয়েছে এরশাদ-খালেদার সরকারের আমলে। ঠিক একইভাবে তিনি আওয়ামী লীগকেও ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। এজন্য মিথ্যা গল্প বানিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গ্রামীণফোনের অনুমতি নেন তিনি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ মালিকানা বিদেশিদের কাছে বেচে দেয়ার পর বেরিয়ে আসে তার চালাকি। তবে ২০০১ সালে বিএনপি সরকারে এলে আবারও বসে ইউনূসের দুর্নীতির মেলা। এমনকি বিএনপির আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারণেই তিনি নোবেল পেয়েছেন। মোটকথা এরশাদ কিংবা খালেদা জিয়ার সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয় না পেলে ইউনূস এত বেপরোয়া হয়ে উঠতেন না বলেও মনে করছেন তারা।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article