পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:৪৭, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩০

পুলিশ সদস্যদেরকে জনগণের বন্ধু হিসেবে সব সময় তাদের পাশে থাকার এবং নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ‘সাধারণ মানুষের একমাত্র নির্ভরতার জায়গা পুলিশ-জনগণকে নিঃস্বার্থ সেবা দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে পুলিশ জনগণের বন্ধু হিসেবে সব সময় তাদের পাশে থাকবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’

 

বুধবার বঙ্গভবনে “পুলিশ সপ্তাহ ২০২৪” উপলক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

চলমান পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, মানুষ বিশ্বাস করে পুলিশই তাদের সাহায্য করবে। জনগণকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে জনআস্থা অর্জনে আপনাদেরকে আরও নিবেদিত হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

‘সাধারণ মানুষ এখনো থানায় যেতে ভয় পায়, একেবারে বাধ্য না হলে কেউ থানায় যেতে চায় না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষের মন থেকে অহেতুক ভীতি ও ঝামেলার শঙ্কা দূর করতে হবে।

মো. সাহাবুদ্দিন আইনি সহায়তা পেতে থানায় আসা মানুষকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে সেবা দিতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আরও নিবেদিত হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি রাস্তায় রাস্তায় রুটিন চেকিং-এর নামে কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখার তাগিদ দেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এছাড়া খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনকেও চাঁদা দেওয়ার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জনগণের কষ্ট বাড়ছে। এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশকে খুব সতর্ক থাকতে হবে এবং যিনি বা যারা এই চক্রের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

বর্তমানে চলমান জাতীয় ‘জরুরি সেবা ৯৯৯, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অনলাইন জিডি’ ইত্যাদি সেবার প্রসঙ্গ তুলে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতে তথ্য-প্রযুক্তিগত সেবার পরিধি বাড়াতে পুলিশকে আরও সচেষ্ট থাকতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের 'সোনার বাংলা' গড়ার প্রত্যয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গঠনে ও সর্বোপরি শত বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, রাষ্ট্রপতি আশা করেন।

তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সুশাসনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো আইনের যথাযথ প্রয়োগ।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের (পুরুষ ও নারী) পেশাদারিত্ব ও সাফল্য আজ বিশ্বে স্বীকৃত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান ও নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠায় পুলিশ সদস্যদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দেশ ও জনগণের সেবায় সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। রাষ্ট্র প্রধান ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে স্মার্ট পুলিশিং এর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

রাষ্ট্রপতি ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৪’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে শাহাদত বরণকারী, বিভিন্ন সময়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানকালে জীবন উৎসর্গকারী এবং করোনা ভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী সকল পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

অনুষ্ঠানে জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বঙ্গভবনের সচিবগণ, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Share This Article