দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে: সংসদে অর্থমন্ত্রী

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:৩০, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ২৯ মাঘ ১৪৩০

সম্পূর্ণ অর্থনীতি পর্যালোচনা চলছে। যার বিভিন্ন ধারা রয়েছে। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, উন্নতির ছাপ দেখতে পাচ্ছি। আরও উন্নতি করতে পারব। তার পরে ধারণা দিতে পারব।

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা চলছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রাথমিক লক্ষণে মনে হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে- এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন পরে পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

সোমবার সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তরে সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

কিশোরগঞ্জের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন তার সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, ডলার সংকটে কারণে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এর সঙ্গে সম্পর্ক মানিল্ডারিং, প্রচুর টাকা বিদেশে চলে গেছে। সে কারণে ডলার সংকট আছে। মানি লন্ডারিং দূর করতে দেশে যে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রদর্শিত আয় আছে সেটাকে বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার দরকার। বিশেষ ব্যবস্থায় অতীতেও সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত তা না করার কারণে বিদেশে টাকা চলে যাচ্ছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও ডলার সংকট দূর করার জন্য অপ্রদর্শিত আয় কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ সরকার দেবে কি না সেটা জানতে চান সোহরাব উদ্দিন। তবে সেটা কালো টাকা নয়, বৈধ অপ্রদর্শিত আয় বলেও উল্লেখ করেন স্বতন্ত্র এ সংসদ সদস্য।

জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সম্পূর্ণ জিনিসটি সরকার পর্যালোচনা করছে। শুধু ঢালাও কালো টাকা নয়, গোটা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। প্রাথমিক লক্ষ্য দেখে মনে হচ্ছে দেশ উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। আরও কিছুদিন গেলে পরিপূর্ণ চিত্র পাব। সেই পর্যন্ত ধৈর্য ধরার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

নীলফামারী-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সিদ্দিকুল আলম তার প্রশ্নে বলেন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে অনেক সরকারি ও বেসরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। সেগুলোর আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চান তিনি।  জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ অর্থনীতি পর্যালোচনা চলছে। যার বিভিন্ন ধারা রয়েছে। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, উন্নতির ছাপ দেখতে পাচ্ছি। আরও উন্নতি করতে পারব। তার পরে ধারণা দিতে পারব।

কুষ্টিয়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুর রউফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, দেশে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৮১ জন আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছে। আরেক স্বতন্ত্র সংসদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে টিআইএন নম্বরধারীর সংখ্যা ৯৯ লাখ ৭০ হাজার, ৪৭১ টাকা। কিন্তু রিটার্ন দিয়েছে ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৮১। বিপরীতে আয়কর আদায় করা হয়েছে ৫ হাজার ৯০১ কোটি টাকা ৬৫ লাখ টাকা।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ৫৬টি প্রকল্প চলমান আছে। তার আরেক প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সরকারের পদক্ষেপের ফলে ২০২৩ সালের নভেম্বর হতে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিক মূল্যস্ফীতি ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুসারে গত ডিসেম্বর মাসে পয়েন্ট ‍টু পয়েন্ট ভিত্তিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশে যেখানে জুনে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ডিসেম্বর ২০২৩ মাস পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ দশমিক ৭০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। এ সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে এক হাজার ৬২৬ কোটি রাজস্ব আহরণ করা হয়েছে। এ সময়ে ঘাটতি রয়েছে ২৩ হাজার ২২৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশে মানব সম্পদ উন্নয়নে ২০২৩ সালে জাপান সরকার আর্থিক অনুদান দিয়েছে। অনুদানের পরিমাণ ৩ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আয়কর রিটার্ন পদ্ধতি আরও সহজ করার জন্য নতুন রিটার্ন ফরম, এক পাতার রিটার্ন ফরম চালু করা হয়েছে। রিটার্ন দাভিল পদ্ধতি সহজ করার জন্য টিআরপি (ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপারেটর) কার্যক্রম চালু করা হবে।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article