শামসুন্নাহার হল ট্রাজেডি: কি হয়েছিল ২৩ জুলাই

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৫৭, শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০২২, ৮ শ্রাবণ ১৪২৯

২০০২ সালের ২৩ জুলাই রাতের অন্ধকারে জঙ্গিজোট বিএনপি-জামায়াতের পুলিশ ও তৎকালীন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল নির্বিচারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সাধারণ ছাত্রীদের ওপর। খুনি সর্দার তারেক রহমানের হাওয়া ভবনের নির্দেশে পুলিশ ও ছাত্রদলের সদস্যরা শামসুন্নাহার হলে ঢুকে ছাত্রীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে এবং ১৮ জন নিরপরাধ ছাত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

শামসুন্নাহার হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক সুলতানা শফির দায়িত্বের মেয়াদ তখনও শেষ হয়নি, শামসুন্নাহার হলের তৎকালীন ক্ষমতাসীন ছাত্রদলের সভানেত্রী লুসি ও তার আশ্রিতা বহিরাগতদের দৌরাত্মে সাধারণ ছাত্রীদের নাভিশ্বাস চরমে ওঠে। এসব কারণে সাধারণ ছাত্রীদের নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অপ্রত্যাশিতভাবে বর্বরোচিত পুলিশি হস্তক্ষেপ ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে পুরুষ পুলিশ দিয়ে ছাত্রী নির্যাতনের প্রথম নিদর্শন।

 

হামলাকারী পুরুষ পুলিশ দলটির নেতৃত্ব দেয় ঢাকা দক্ষিণের তখনকার এডিসি আবদুর রহীম। সেই রাতে পুলিশের অশ্লীলতা আর নিষ্ঠুরতার শিকার হয় শত শত সাধারণ ছাত্রী। রুমে ঢুকে, করিডোরে যাকে যেখানে পেয়েছে নির্বিচারে পিটিয়েছে পুলিশ আর ছাত্রদলের ক্যাডারেরা। এরপর ফৌজদারি মামলার আসামীর মতো ধরে নিয়ে রেখেছিলো থানা হাজতে।

পরেরদিন ২৪ জুলাই এই বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের আহবানে সকল শিক্ষার্থী–শিক্ষক প্রতিবাদে শামিল হয়, প্রতিবাদী শিক্ষার্থী–শিক্ষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ করতে থাকে পুলিশ। অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়, অথচ তখনকার উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া দশ হাজার সাধারণ শিক্ষার্থীর সাহসী আন্দোলনকে ‘বহিরাগতদের আন্দোলন’, ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ ইত্যাদি নামে–উপনামে আখ্যায়িত করে দায় এড়ানোর চেষ্টা করে।

উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী ২৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্র–ছাত্রীদের অবিলম্বে হলত্যাগের নির্দেশ দেয়। পুলিশের দখলে চলে যায় ক্যাম্পাস। তারপর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রোকেয়া হলের সামনের রাস্তাকে ‘মুক্তাঞ্চল’ ঘোষণা করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। শহীদ মিনারেও অবস্থান গ্রহণ করে আন্দোলন ও অনশন চালিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা।

২৯ জুলাই খুনি সর্দার তারেক রহমানের হাওয়া ভবন আর পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে পুলিশ আবার শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়, সেদিন যারা প্রতিবাদ করছিলো তাঁদের ওপরে নেমে আসে ইতিহাসের বর্বরোচিত নির্যাতন, ছাত্রদল ও পুলিশের যৌথ লাঠিচার্জে আহত হয়েছিলো অর্ধশত শিক্ষার্থী–শিক্ষক আর সাংবাদিক।

ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের প্রবল আন্দোলনের মুখে ঘটনার দীর্ঘ আটদিন পর ১ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এছাড়া প্রক্টর অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুলতানা শফিও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ইতিহাসের বর্বরোচিত এই ঘটনার পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্ধারিতভাবে বন্ধ ছিলো ৭৮ দিন।

ইতিহাসের বর্বরোচিত শামসুন্নাহার হল ট্র্যাজেডি স্মরণে ২০০৩ সালের ২৩ জুলাই থেকে প্রতি বছর নিয়মিতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন–বর্তমান শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে শামসুন্নাহার হল ট্র্যাজেডি দিবস পালন করে আসছে।

ইতিহাসের বর্বরোচিত এই ঘটনাটির পরে আজও যারা শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি করে তাদের জন্য শুধুই ঘৃণা।

Share This Article


জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছি

বাংলাদেশ সফরে আসছেন কাতারের আমির

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

‘মুজিব ব্যাটারি’ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে যাত্রীবাহী ফেরিডুবি, নিহত ৫৮

সব উপজেলায় একটি করে মিনিস্টেডিয়াম নির্মাণ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

সারাদেশে হিট অ্যালার্ট, দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিতের তাগিদ

বিএনপির বিরুদ্ধে করা মামলা রাজনৈতিক নয়: প্রধানমন্ত্রী

ভোট উৎসবে বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ

ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিলেন খালেদা জিয়া: শেখ হাসিনা

কেউ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি: প্রধানমন্ত্রী