কেমন হবে রোজার পরে বিএনপির 'কঠোর আন্দোলন' ?

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:২৯, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩, ২৩ চৈত্র ১৪৩০
  • ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের ঘোষণায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
  • যতবারই ঈদের পরে আন্দোলনের হুংকার দিয়েছে ততবারই ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি।
  • আন্দোলনে সফলতা না আসায় মানসিকভাবে হতাশায় পড়েন দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
  • অনাস্থা ও অবিশ্বাসে তারেক-ফখরুল দ্বন্দ্বের সূচনা।

বরাবরের মতো এবারও ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। তাদের এই আন্দোলনের ঘোষণায় জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দলটির এ ঘোষণায় দলের ভেতর-বাইরে সৃষ্টি হয় হাস্যরসও। কারণ ইতিপূর্বে দলটি যতবারই ঈদের পরে আন্দোলনের হুংকার দিয়েছে ততবারই ব্যর্থ হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথম ২০১৪ সালের ২২ জুন এক জনসভায় 'ঈদের পর কঠোর কর্মসূচি'র  ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার পর থেকে কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে আন্দোলনের ডাক শোনার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সেই আন্দোলনের ডাক আর আসেনি, এসেছে রোজা-ঈদ। তখন বলা হয়েছে, ঈদের পর আন্দোলন হবে। কিন্তু সে বছর রোজা আর ঈদের পর দেশ স্বাভাবিকই ছিলো।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ডাকে বিএনপি। কিন্তু সেই কর্মসূচিও এক পর্যায়ে ভেঙে পড়ে। বারবার আন্দোলনে ডাক দিয়ে সেই আন্দোলনে সফলতা না আসায় মানসিকভাবে হতাশায় পড়েন দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপরও অনাস্থা ও অবিশ্বাস বেড়ে যায়।তারেক-ফখরুল দ্বন্দ্বের সূচনা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা আসলে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। লন্ডন থেকে যে প্রেসক্রিপশন আসে, সে সিদ্ধান্ত  মুখ বন্ধ করে মেনে নিতে বাধ্য হই। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির রাজনীতিতে আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। এবার আন্দোলনেও নেতাকর্মীদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তবুও বিদেশ থেকে তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেগুলো আমাদের মেনে চলতে হবে। কিন্তু ঈদের পর আন্দোলনে কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন না ওই নেতা।'ঈদের পর কঠোর আন্দোলন বক্তব্যটি সাধারণ মানুষের মুখে 'মুখরোচক' বাক্যে পরিণত হয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও খুব বেশি সময় নেই।রোজার ঈদের কিছুদিন পরেই শুরু হবে বর্ষা মৌসুম।আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বর্ষায় আন্দোলনের পরিবেশ থাকেনা।বর্ষার শেষভাগেই  হজ্জ'র প্রস্তুতিও কুরবানীর ঈদ পর্ব।এর পরেই শুরু হবে নির্বাচনী প্রস্তুতি।নির্বাচনের আগেই রয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।কাজেই সেভাবে পর্যায়ক্রমে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার সুযোগ আদৌ নেই।কেননা ঘোষণা দিলেই হঠাৎ করে কঠোর আন্দোলন তৈরি হয়ে যায়না।ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্দোলন কোন ছেলেখেলা নয়, এখানে তাড়াহুড়ো করে কিছু হয় না। আন্দোলন করতে হলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হয়। এছাড়া রাজনৈতক কর্মসূচিকে সফল করতে যে পরিমান মেধাবী ,দূরদর্শী, প্রতিশ্রুতিশীল ও ত্যাগী নেতাকর্মীর প্রয়োজন, সেটা এমুহূর্তে বিএনপিতে নেই। দলে ত্যাগী নেতার অভাব রয়েছে, কারো নির্দেশনা কেউ মানতে চায় না। তাই ঢাক ঢোল পিটিয়ে ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কথা বললেও  আদতে তা কটটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দেহের  যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

বিষয়ঃ বিএনপি

Share This Article