ধর্মঘট নিষিদ্ধের ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:২৬, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩, ২৩ চৈত্র ১৪৩০

জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কোনো অত্যাবশ্যক পরিষেবার ক্ষেত্রে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করতে পারবে সরকার। কোনো ব্যক্তি বেআইনি ঘর্মঘট শুরু করলে বা চলমান রাখলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া সরকার প্রয়োজন মনে করলে জনস্বার্থে কোনো প্রতিষ্ঠানে লকআউট ও লেঅফ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে। এসব বিধান রেখে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল-২০২৩ সংসদে তোলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিলটি সংসদে তোলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৯৫৮ সালের এসেনসিয়াল সার্ভিসেস (মেইনটেন্স) অ্যাক্ট এবং ১৯৫৮ সালের এসেনসিয়াল সার্ভিসেস (সেকেন্ড) অর্ডিন্যান্স রহিত করে নতুন এই আইন করা হচ্ছে।

বিলে বলা হয়েছে, অত্যাবশ্যক পরিষেবা বলতে যেসব পরিষেবা বোঝাবে সেগুলো হলো— ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ই–কমার্স ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল সেবা; ডিজিটাল আর্থিক সেবা; বিদ্যুৎ সঞ্চালন, বিতরণ, সরবরাহ ও বিক্রয় এবং এ সংক্রান্ত স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণ; স্থলপথ, রেলপথ, জলপথ বা আকাশপথে যাত্রী বা পণ্য পরিবহন সেবা; বিমান ও বিমানবন্দর পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত পরিষেবাসহ বাংলাদেশ বেসামরিক ও বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কার্যপরিধিভুক্ত অন্য যে কোনো পরিষেবা; স্থলবন্দর, নদীবন্দর, সমুদ্রবন্দর বা বিমানবন্দরে পণ্য বোঝাই–খালাস, স্থানান্তরসহ সংম্লিষ্ট বন্দর বা বন্দর সম্পর্কিত পরিষেবা; কোনো পণ্য বা যাত্রীকে ছাড়পত্র প্রদান সম্পর্কিত পরিষেবা; চোরাচালান প্রতিরোধ সম্পর্কিত পরিষেবা; সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত পরিষেবা এবং দেশের প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে সশসস্ত্র বাহিনী কর্তৃক স্থাপিত বা প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা; দেশের প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য বা মমালামাল উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত প্রতিষঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা; খাদ্যদ্রব্য ক্রয়, বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিতরণের কাজে নিযুক্ত সরকারি মালিকানাধীন বা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা; সরকারি মালিকানাধীন বা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পানি সরবরাহ বা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সম্পর্কিত পরিষেবা; হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা এরূপ প্রতিষ্ঠান এবং ডিসপেনসারি সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা; ঔষধ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়–বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা কারখানার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা; রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত পরিষেবা; কয়লা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, ইস্পাত ও সার উৎপাদন, পরিবহণ, সরবরাহ বা বিতরণের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা; কোনো তেলক্ষেত্র, তেল শোধানাগার, তেল সংরক্ষণাগার এবং পেট্রোলিয়াম বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ উৎপাদন, পরিবহণ, সরবরাহ ও বিতরণের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান; টাকশাল ও নিরাপত্তামূলক মুদ্রণ কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা।

আইনে কিছু ক্ষেত্রে চাকরি বা চাকরি সংশ্লিষ্ট চাকরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো পরিষেবাকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে। এর মধ্যে আছে- কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে জনকল্যাণমূলক সেবা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এরকম চাকরির সঙ্গে সংম্লিষ্ট কোনো পরিষেবাসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সরকার অত্যাবশ্যক পরিষেবা ঘোষণা করতে পারবে। জননিরাপত্তা বা জনগণের জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এ ধরনের কোনো পরিষেবা। জনগনের জন্য অসহনীয় কষ্টের কারণ হচ্ছে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন পরিষেবা এবং দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারা দেশ বা দেশের কোনো অংশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আবশ্যকীয় কোনো পরিষেবা।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article