সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি!
![সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি!](/Uploads/Images/News/2023/4/Image-11603-20230405140028.webp)
আওয়ামী লীগ সরকারের অধিনে আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বিএনপি। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এ দাবিতেই এতোদিন অটল ছিল দলটি। তবে দ্বাদশ নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই পরিবর্তন হচ্ছে তাদের কর্মকান্ড। এখন জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এরই মধ্যে প্রচারণায়ও নেমেছেন দলের মনোনীত প্রার্থীরা। এমনটাই জানিয়েছে বিএনপির বিশ্বস্ত একটি সূত্র।
সম্প্রতি দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেট। গাজীপুর সিটি নির্বাচন ২৫ মে, খুলনা ও বরিশাল ১২ জুন সিলেটে এবং রাজশাহীতে ২১ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্রটি বলছে, আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহনের কথা না বললেও দলের সবুজ সংকেত পেয়ে এই পাঁচটি সিটির মধ্যে তিনটিতে দলটির মনোনীত প্রার্থীরা অংশগ্রহণের জন্য মাঠে নেমে গেছেন। এর একটি হলো সিলেটের গত দুই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র পদে মনোনীত প্রার্থী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এছাড়া গাজীপুর ও বরিশালে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলমান বলেও জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিএনপি নির্বাচনে না আসার মনোভাব থাকলেও এতে ঘোর আপত্তি ছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। তারা শুরু থেকে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরোধীতাও করছেন। তাদের অনেকেই নির্বাচনমুখী। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ভয়ে অনেকেই চুপ ছিলেন, দলীয় কার্যক্রমে নিজেদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলেন। তবে বিএনপির যেসব নেতারা ইতিমধ্যেই বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাদের আর কোনো ভয় নেই। তারা যে কোনো নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সদা প্রস্তুত। আর এ কারণেই বিএনপিতে যে গ্রুপটি এতোদিন নির্বাচন বিমুখ ছিল, সে গ্রুপটিও ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এখন তাদের ভাবনা নির্বাচনে না গিয়ে নয়, বরং অংশগ্রহণ করেই লাভ।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আসন্ন সিটি নির্বাচনসহ আসছে জাতীয় নির্বাচনের ৩০০ আসনেই ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটে ভোট হবে। বিএনপির নির্বাচনমুখী হওয়ার পেছনে এ দিকটিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কেননা শুরু থেকেই ইভিএমে আপত্তি ছিল বিএনপির। এখন ব্যালটে ভোট হওয়াতে জয় নিয়েও আশাবাদী দলটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির অনেক প্রার্থীই ইতিমধ্যে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ্রগ্রহণ করেছেন। সে কারণে কেউ কেউ দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন, আবার কেউ কেউ দল থেকে পদত্যাগ করেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আসছে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যদি বিএনপির এসব প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে বিএনপির নির্বাচন বয়কটের যে বাধা, সে বাধাটা ভেঙ্গে যাবে। তাদের ধারণা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির অনেক প্রার্থী, বিএনপির যে দাবি ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না’- সে অবস্থানে থাকবে না। আর এসব বিবেচনায় নিয়েই বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার নীতি থেকে সরে এসেছে বলেও জানান বিশ্লেষকরা।