'জুম' নির্ভর দলে পরিণত হয়েছে বিএনপি!

বিএনপিতে নেতৃত্ব সংকট দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় বারবার উদ্যোগ নিলেও সংগঠিত হতে পারেনি দলটি। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর মনোমালিন্য প্রকাশ্যে রূপ নেয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে তৃণমূলে। ফলে সরকারিবরোধী আন্দোলনেও মিলছে না সুফল। একই সঙ্গে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে দলের হাইকমান্ড।

জানা গেছে, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বিদেশে পালাতক রয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এমন পরিস্থিতিতে তারেকের নির্দেশনায় দল চালাচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জানান, মির্জা ফখরুল দলের মহাসচিব হলেও তার প্রতি অনেক নেতাদেরই আস্থা নেই। এরই মধ্যে কয়েকবার বিতর্কের মুখেও পড়েছেন। বিভিন্ন কর্মসূচি বা আন্দোলনের ডাক দিয়ে আড়ালে বসে থাকায় এখন অনেকেই তার কমান্ড মানতে চান না। এছাড়া বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই এককভাবে নেন তিনি। ফলে ইচ্ছা থাকলেও অনেক নেতা-কর্মী সাড়া দিতে পারেন না।

দলীয় সূত্র জানায়, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কোনো আন্দোলনেই সফলতা আসেনি। ফলে ঈদের পর নতুন আন্দোলনের ঘোষণা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। কার্যকর কোনো কর্মসূচি না থাকায় বর্তমানে 'প্রেস কনফারেন্স' ও 'জুম' নির্ভর রাজনীতি করছে বিএনপি। ফলে দলের ভেতরে অবিশ্বাস ও অনাস্থা প্রকাশ পাচ্ছে। এছাড়া দলটির নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মতো সিধান্ত না নিয়ে বিদেশি কূটনৈতিকদের দিকে তাকিয়ে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতা বলেন, বর্তমানে বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে এক ধরনের হতাশা ও বিভ্রান্তি বিরাজ করছে। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বহীনতার কারণে দলের সাংগঠনিক কাঠামো একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ছে।

দলটির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বিএনপিতে ত্যাগী নেতাদের বড় অভাব দেখা দিয়েছে। স্বার্থপর নেতায় ভরে গেছে দলটি। দলকে এগিয়ে নেয়ার মতো ন্যূনতম ইচ্ছাশক্তি নেই কারো। আর এ কারণেই মিটিং-মিছিল না করে 'প্রেস কনফারেন্স ও 'জুম নির্ভর হয়ে পড়েছে দলটি।