দুইটি জেলাসহ ৫৪ উপজেলা ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:২৯, মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২, ৪ শ্রাবণ ১৪২৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক আগামী বৃহস্পতিবার ২৬ হাজার ২২৯টি পরিবারের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে দুটি জেলাসহ ৫৪টি উপজেলা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাঁচটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে যুক্ত হয়ে এই ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গৃহহীনমুক্ত জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে পঞ্চগড় ও মাগুরা।


 

প্রকল্পগুলো হচ্ছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহান পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার জঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।

এর আগে এ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৭০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন নোয়াখালী জেলা বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং ভূমিহীন গৃহহীন অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। 

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ণ নামে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া জানান, প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি জমির মালিকানাসহ ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে একই বছর ২০ জুন জমির মালিকানাসহ ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়।

 প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত মোট একক ঘর সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। চলমান তৃতীয় পর্যায়ে মোট বরাদ্দকৃত একক ঘরের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮০০টি। যার মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল হস্তান্তরিত হয় ৩২ হাজার ৯০৪টি এবং আগামী ২১ জুলাই হস্তান্তর হবে ২৬ হাজার ২২৯টি। 

এছাড়া আরো নির্মাণাধীন রয়েছে ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ঘরের মোট সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি। এ প্রকল্পে এ পর্যন্ত বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

এই প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর, দেবীগঞ্জ, তেতুলিয়া, বোদার শতভাগ ও মাগুরা জেলার মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মহম্মদপুর, শালিখার শতভাগসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৫৪টি উপজেলায় আর কোনো গৃহহীন থাকছে না।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, আগামী ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর চাবি হস্তান্তরের মাধ্যমে পঞ্চগড় ও মাগুরায় আর কোনো ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। এটি আমাদের জন্য একটি বিশাল অর্জন। গত মাসে আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে আমাদের মনোবল আকাশচুম্বী হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের আনাচেকানাচে মানবতার ছোয়া পৌঁছে যাচ্ছে। শতভাগ বাস্তবায়ন করা গেছে বাংলাদেশের দুটি প্রত্যন্ত জেলা। সুতরাং উন্নয়নের ছোঁয়া এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে।

কত টাকার জমি ক্রয় : সারা দেশে প্রায় ১৯১ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করা হয়। যার জন্য ব্যয় হয় ১৩৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ক্রয়কৃত জমিতে ৮ হাজার ৪৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়।

কত খাস জমি উদ্ধার : সারা দেশে ৫ হাজার ৫১২ দশমিক ৪ একর খাস জমি উদ্ধার করে গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। যার স্থানীয় বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯ লাখ টাকা।

সম্প্রদায়গত পুনর্বাসন : মূল ধারার জনগোষ্ঠী ছাড়াও সম্প্রদায়গত পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ কার্যক্রম নেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলা ২২ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে ১২৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়। নদীর তীরে নোঙর করে জীবন-যাপন করা মান্তা সম্প্রদায়ের ১১৫ পরিবারের মধ্যে ৪২টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ৫৯টি বেদে পরিবার, এছাড়া কুষ্ঠ রোগীদের পুনর্বাসিত করা হয়, দিনাজপুরের কয়লাখনিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৩১৮টি শ্রমিক পরিবার, নীলফামারীর ভিক্ষুকদের জন্য ৬৯১টি, নড়াইলে ৩৩৩ ভিক্ষুক পরিবার, নীলফামারী জেলায় হরিজন সম্প্রদায়ের ৬০ পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়। 

এদিকে কক্সবাজারে বসবাসরত ৬৪০টি জলবায়ু উদ্বাস্ত পরিবারকে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়। অন্যদিকে তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জন্য রাঙ্গামাটি, বান্দারবন, খাগড়াছড়ি এলাকার মানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিশেষ ডিজাইনের সর্বমোট ৫৮০টি পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়।

পুনর্বাসনের পর কার্যক্রম : উপকারভোগীদের পুনর্বাসনের পর বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ভিজিএফ সুবিধা প্রদান, প্রশিক্ষণ প্রদান, সমবায় সমিতি গঠন, ঋণ প্রদান, কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশন, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, পুকুর খনন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, বৃক্ষরোপণ, ল্যাট্রিন ও বাথরুম নির্মাণ, গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন, শিক্ষা কার্যক্রম, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম।

Share This Article


কখনোই যাকাত-ফেতরা দেননা ড. ইউনুস!

জল উৎসবে মাতোয়ারা হলো হাজারো মারমা তরুণ তরুণী

হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় ও নির্বাহী কমিটি গঠন

প্রথম ধাপে ১ হাজার ৮৯১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

থাইল্যান্ড, সৌদি ও গাম্বিয়া সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

আজ শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে যাবেন ড. ইউনূস

৭ অঞ্চলে তাপমাত্রা ছাড়াল ৪০ ডিগ্রি

যেভাবে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিককে দেশে আনা হবে

দেশের দুই বিভাগে ঝড়-বৃষ্টির আভাস

ট্রান্সকমের বিরোধ: বিক্রি হচ্ছে প্রথম আলো?

ঈদ ও নববর্ষে পদ্মাসেতুতে ২১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা টোল আদায়