প্রথম আলোর 'মিস ইনফরমেশন':ভুল স্বীকার যথেষ্ট কি?

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৩৮, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩, ১৬ চৈত্র ১৪২৯

কোন সংবাদ প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য, ছবি বা ভিডিওর সূত্র যথাযথভাবে উল্লেখ না করা এবং কারো বক্তব্য যথাযথভাবে এট্রিবিউট না করার কারণে কিভাবে ভুল তথ্য বা গুজব ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হয় তার একটি দৃষ্টান্ত দৈনিক প্রথম আলোর একটি ছবি– যা যথাযথ সূত্রসহ প্রকাশ না করায়– দেশের মিডিয়াতে ব্যাপক বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে,যদিও পরক্ষণেই তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে।কিন্তু সব ' মিসইনফরমেশন'র ভুল স্বীকারই কি যথেষ্ট? প্রশ্ন সর্ব মহলে।

কিভাবে প্রথম আলোর ছবিটি মিসইনফরমেশন এবং ডিসইনফরমেশন ছড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে আসুন তা দেখে নেয়া যাক।

প্রথম আলো গত ২৬ মার্চ “আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সাথে ছিল একটি ছবি যেটিতে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের গেইটের বাইরে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে সৌধের দিকে তাকিয়ে আছে একটি শিশু।

সংবাদের সাথে ছবি প্রকাশের প্রকৃত নিয়ম হচ্ছে, ছবির সাথে একটি ক্যাপশন থাকা। সেই ক্যাপশনে দৃশ্যটি কোথায় এবং কবে তোলা, তাতে দৃশ্যমান বিষয়/ব্যক্তির পরিচয়  এবং ফটোগ্রাফারের নাম থাকতে হয়। প্রথম আলোর ফেসবুকে শেয়ার করা পোস্টারে এই নিয়মটি মানা হয়নি।

ছবিতে ক্যাপশনে লেখা ছিল: “সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের দর্শণার্থী বেশি এলে ফুল বিক্রি বাড়ে সবুজ মিয়ার। এজন্য স্বাধীনতা দিবসের অপেক্ষায় আছে এই শিশু,শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে স্মৃতিসৌধের মূল ফটকে। ছবি: প্রথম আলো” অথচ ক্যপশনটি অনলাইনে এমনি দেখা যায়না। কার্সর নিলেই ক্যপশনটি দেখা যায়।

অন্যদিকে ওই শিশুর ছবির নিচে উদ্ধৃতি হিসেবে জাকির হোসেন নামের এক দিনমজুরের উদ্ধৃতি জুড়ে দেয়া হয়েছে। উদ্ধৃতিটি হলো: “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।” অথচ এই উদ্ধৃতিটি ছিলো প্রতিবেদনের মাঝে থাকা দিন মজুর জাকির হোসেনের। আর যেই শিশুর ছবি ছাপা হয়েছে, সে একজন ফুল বিক্রেতা শিশু, যার নাম সবুজ।

এর ফলে সকল পাঠকের মনে হয়েছে “মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব” কথাটি বলেছে একটি শিশু।  যে একজন দিনমজুর। আর এটি নিয়েই তৈরি  হয় মারাত্মক বিভ্রান্তি,যদিও প্রথম আলো নিজেদের ভুল স্বীকার করে তা সরিয়ে ফেলে।

ভুল স্বীকার কি যথেষ্ট ?

এটি শুধুই একটি ভুল নয় বরং পরিকল্পিত বিভ্রান্তি। কারণ একটি শিশু যখন মাছ, মাংস খাওয়ার স্বাধীনতার কথা বলে, তখন এটি পাঠকের মনোজগতে ব্যাপক আবেগ সৃষ্টি করে। প্রথম আলো এই লোভ সামলায়নি বরং সেই মিথ্যা আবেগ দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সাথেসাথে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে দেশের 'কল্পিত করুন দশা'র বার্তা প্রেরণ করেছে।

বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে খুব কম সময়েই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব। প্রথম আলো মাত্র ১৭ মিনিট পরই সংবাদটি অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলেছিলো।কিন্তু এই ১৭ মিনিটে এটি সারাদেশে এমনকি বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে।পরবর্তীতে এখনো পর্যন্ত পত্রিকার সেই ভুল ক্যাপশন যুক্ত ছবিটিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ শেয়ার করে চলেছে।

তাই একটি জাতীয় দৈনিকের শুধু সরি বলে পার পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিৎ নয়।  এদেশে ডিসইনফরমেশনের সুযোগ নিয়ে বহু বড় ধরণের গুজব ছড়ানো হয়েছে, সংঘাত হয়ে রক্তপাত হয়েছে। তাই গণমাধ্যমে 'সরি' বলেই খালাস পাওয়ার প্র্যকটিস যদি বজায় থাকে তাহলে ভবিষ্যতে আরো বড় অপরাধ আর অঘটনের সুযোগ থেকে যায়।কাজেই যে ভুল মেসেজের জন্য একটি দেশ ও জাতি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে সেই ভুলের জন্য  ভুল স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনা কি যথেষ্ট?প্রশ্ন বিবেকবান মানুষের?

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article


বুধবার থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, সই হচ্ছে ৫ চুক্তি

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া

‘হিট অ্যালার্ট’র সময় আরও তিন দিন বাড়ল

সকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা

১৯ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪ হাজার কোটি টাকা

তীব্র গরমে রোগী ভর্তি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় বিএনপি: কাদের

উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে : ইসি আলমগীর

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ’ সফরে ঢাকা আসছেন কাতারের আমীর

বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই: সেনা প্রধান

সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিলো সরকার