রাজনীতিতে উল্টো হাওয়া, বিএনপি এখন ভারতমুখী !

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:১৯, বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯

বিএনপি নেতারা বলছেন, ৮০ ও ৯০-এর দশকের রাজনীতি এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন, বিএনপি সরকারের বিগত আমলগুলোতে ভারতের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের নীতিকে ভুল ও বোকামি বলেও মনে করেন তারা। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)যে দলটি ভারত বিরোধীতার জন্য বিখ্যাত। দলটির নেতাকর্মীরা সারাবছরই আওয়ামী লীগকে ভারতের দালাল, ভারতের বি-টিম, এমন নানান নামে ডেকে থাকেন। আজ সেই বিএনপিই কিনা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে যাচ্ছে! গোপনে সম্পর্ক  এগিয়েছেও অনেকটা। হয়েছে একাধিক বৈঠকও। জানেন কিছু?    

প্রচলিত আছে,  বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ধারা যদি হয় আওয়ামী লীগ অপর ধারাটি হচ্ছে আওয়ামী বিরোধীতা। যার সুত্রপাত হয়েছিলো ১৯৭১ সালে। তখন বিএনপি ছিলো না,  কিন্তু ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান মূলত আওয়ামী বিরোধীতাকে পূঁজি করেই বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত ও ভারতীয় কংগ্রেস পার্টি বাংলাদেশকে দু’হাত ভরে সহযোগিতা করে। সেই থেকে আওয়ামী লীগের সাথে একটি ঐতিহাসিক সম্পর্ক সৃষ্টি হয় ভারতের। সেই থেকেই আওয়ামী লীগের বন্ধুর সঙ্গে শত্রুতা আর শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতিতেই রাজনীতি করে আসছে বিএনপি।

কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে হঠাত করেই উল্টো হাওয়া বইতে দেখা গেছে। কট্টর ভারত বিরোধী বিএনপিও এবার ভারতের সঙ্গে বন্ধুতের হাত বাড়িয়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভারতের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি।

বিএনপির প্রায় সব নেতাই বিশ্বাস করেন, ভারত যদি নমনীয় না থাকতো তাহলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারতো না। তাই দলটির নেতারা প্রকাশ্যে ও  গোপনে বৃহৎ প্রতিবেশী দেশটির আনুকল্য পেতে ধর্ণা দিয়ে বেড়াচ্ছেন।

গত ১৬ মার্চ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ভারতীয় হাই কমিশনারের বাসায় নৈশভোজে মিলিত হন।পরে বৈঠকেও বসেন। সেই বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি নেতারা সরাসরি কিছু না বললেও এটি যে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি চেষ্টা তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এর আগেও  থাইল্যান্ডে সস্ত্রীক চিকিৎসা করতে গিয়ে ভারতের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল। বৈঠক শেষে সরাসরি লন্ডনে চলে যান ফখরুল। সেখানে গিয়ে ভারতীয় নেতাদের মনোভাব সরাসরি তারেককে অবহিত করেন তিনি।

অন্যদিকে গত বছর অনেকটা গোপনেই ভারত সফরে যান বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির।  সেখানে মোদি সরকারের শীর্ষ নেতাদের কাছে  বাংলাদেশে নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভারতের সমর্থন চেয়েছেন।

পরদিন ৮ জুন ভারতের দৈনিক দ্য হিন্দু ‘র খবরে বলা হয়, বিএনপি বলছে, পেছনে ফিরে তাকানোর পরিবর্তে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। ৮০ ও ৯০-এর দশকের রাজনীতি এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিএনপি সরকারের বিগত আমলগুলোতে ভারতের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের নীতিকে ভুল ও বোকামি বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতারা।

বর্তমানে বিএনপির পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে যে তারা ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করে না, সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে তাদের কোনো আতাঁত নাই। তবে ভারত এখনও বিএনপির কথায় পুরোপুরি আস্বস্ত হতে পারেনি।ফলে বিএনপির প্রতি ভারতের মনোভাব কেমন হবে তা ভবিষ্যতই স্পষ্ট করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Share This Article